কাঁথিতে বিজেপি-র জয়ী প্রার্থী অরূপ দাস, দুলাল রায় এবং সুশীল দাস। —নিজস্ব চিত্র।
কাঁথিতে ‘ক্ষয়’ আটকাতে পারল না বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে কাঁথি পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতে এগিয়ে ছিল তারা। সেখানে এ বারের পরীক্ষায় মাত্র ৩টি ওয়ার্ড ধরে রাখতে পারল পদ্মশিবির।
ঘটনাচক্রে, ২০১৫ সালের পুরভোটের ফল অনুযায়ী কাঁথি পুরসভার ২১টি আসনই ছিল তৃণমূলের দখলে। এ বারেও আনুষ্ঠানিক ভাবে কাঁথি ‘তৃণমূলেরই দখলে’। কিন্তু সেই পরিসংখ্যান অঙ্কের কথা বললেও রাজনীতির কথা বলে না। রাজনীতির কথা বললে, কাঁথির ‘অধিকার’ তৃণমূলের থেকে চলে গিয়েছিল বিজেপি-র হাতে। কারণ, দাপুটে নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ থাকলেও তাঁর বাবা প্রবীণ রাজনীতিক শিশির অধিকারীর গায়েও গেরুয়া রঙের ছোঁয়া লেগেছিল। শুভেন্দুর ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌম্যেন্দু অধিকারীও বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। শুভেন্দুর অপর ভাই তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী অবশ্য এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। এমনকি, সম্প্রতি দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদদের নিয়ে যে ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছিলেন, সেখানেও তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষে উপস্থিত ছিলেন দিব্যেন্দু।
তবে কাঁথিতে সবুজ ঝড়ের মধ্যেও বিজেপি ৩টি আসনে জয় পেয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী তথা দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপ দাস। জয়ের ব্যবধান ১৭৮ ভোট। কাঁথির স্কুলবাজার এবং আথিলাগড়ি এলাকা হল ১০ নম্বর ওয়ার্ড। যা অরূপের নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিজেপি-র দুলাল রায় জিতেছেন ১৮৮ ভোটে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে পদ্মপ্রার্থী সুশীল দাস জয় পেয়েছেন ৭১৯ ভোটে।
বিধানসভা ভোটের নিরিখে অধিকাংশ ওয়ার্ডেই এগিয়ে থাকলেও কাঁথি দখলের অনেক আগেই থেমে গিয়েছে বিজেপি। এ নিয়ে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ফোনে সাড়া পাওয়া যায়নি বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদাম পণ্ডিতের। পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। সুদামের ব্যাখ্যা, ‘‘কাঁথি পুরভোটে সন্ত্রাস না হলে এ বার ফলাফল আলাদা হত। ৩টি আসনের বদলে এ বার বোর্ড দখল করত বিজেপি। এ নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কে ভোট দিয়েছে।’’
তবে তৃণমূল স্বভাবতই ‘উৎফুল্ল’। জোড়াফুল শিবিরের নেতাদের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি বিরোধীপক্ষে থাকলে ভাল কাজ হবে।’’ বিরোধীশূন্য হয়নি কাঁথি। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হলেও ৩টি ওয়ার্ড জিতেছে গেরুয়া শিবির। যে প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কাঁথির তৃণমূল নেতা অখিল গিরির কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি বিরোধী আসনে থাকলে ভাল কাজ হবে। ‘বিরোধীশূন্য’ কথাটা শুনতে খারাপ লাগে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy