Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Health

রোগী বাড়ছে, ‘লাল’ জেলার হুঁশ কোথায়!

খড়্গপুর থেকে যে ছ’জন জওয়ান করোনা আক্রান্ত হয়ে বড়মায় এসেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন পাঁশকুড়া আরপিএফে কর্মরত ছিলেন।

নন্দকুমার বাজারে ক্রেতাদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

নন্দকুমার বাজারে ক্রেতাদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া ও তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০১:০৫
Share: Save:

৪৮ ঘণ্টার ব্যবধান। দুই থেকে ১২ জনে পৌঁছে গেল বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শুক্রবার সকালে নন্দকুমার বাজারে সাপ্তাহিক হাটে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের দু’ধারে প্রচুর দোকানপাট বসে যায়। নিত্য সামগ্রী দোকানের পাশাপাশি পোশাক, স্টেশনারি এবং নির্মাণ সামগ্রীর দোকান খোলা থাকতেও দেখা যায়।

চলতি মাসের গোড়ায় পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের বড়মা হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করা হয়। দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার করোনা আক্রান্তদের এখানে চিকিৎসা করা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, তিন দফায় এখানে আগে ১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। সকলেই সুস্থ হয়ে বাড়ি যান। তবে বুধবার রাতে মেচেদায় কর্মরত করনো আক্রান্ত এক আরপিএফ জওয়ানকে বড়মায় আনা হয়। পরে খড়্গপুরের আরও ছয় আরপিএফ জওয়ান, ঘাটালের এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং হলদিয়ার আরও চার করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

খড়্গপুর থেকে যে ছ’জন জওয়ান করোনা আক্রান্ত হয়ে বড়মায় এসেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন পাঁশকুড়া আরপিএফে কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রের পাঁশকুড়ার আরপিএফ পোস্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেচেদার পোস্টটি এখনও বন্ধ হয়নি। তবে সেখানে ১৭ জনকে নিভৃতবাসে (কোয়রান্টিন) পাঠানো হয়েছে। খুব কম সংখ্য কর্মী দিয়ে চলছে মেচেদার আরপিএফ পোস্ট।

পূর্ব মেদিনীপুরে নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘হলদিয়ায় নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়ে বড়মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখনও পর্যন্ত তাঁদের সংক্রমণের কারণ কিছু জানা যায়নি।’’

এর মধ্যেও জেলা সদর তমলুকের পাশেই নন্দকুমার বাজারে এ দিন যে চিত্র দেখা গিয়েছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, মানুষ আদৌ পরিস্থিতির গুরুত্বটা বুঝছেন তো! এ দিন ওই বাজারে যে সব ‘অপ্রয়োজনীয়’ দোকান খুলেছিল, এবং তাতে যে ভিড় হয়েছিল, তা সামাল দিতে নন্দকুমার থানার পুলিশ লাঠি নিয়ে লোকজনকে তাড়া করে। নিয়ম ভেঙে দোকান খোলার অভিযোগে তিন জন ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়েও যায়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দকুমারে প্রতি সপ্তাহে সোম এবং শুক্রবারের যে হাট বসত তা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এ দিন সকালে সাপ্তাহিক হাটের জায়গার পরিবর্তে রাজ্য সড়কের ধারে প্রচুর দোকানপাট বসে যায়। একাংশ পোশাক, স্টেশনারি ও নির্মাণ সামগ্রীর দোকানও খোলা হয়। অভিযোগ স্বীকার করে নন্দকুমার বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক গৌর সাউটিয়া বলেন, ‘‘সাপ্তাহিক হাট বন্ধ করে বাজারে আনাজ, চাল, মাছ, মাংস, ডিম, ফল, মুদি প্রভৃতি দোকান সকাল ১০ পর্যন্ত খোলা রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও একাংশ ব্যবসায়ী নিয়ম ভেঙে এ দিন অন্য দোকান খুলেছিলেন। প্রচুর ভিড়ও হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।’’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের রামতারক বাজারেও সাপ্তাহিক হাট বসেছিল। সেখানেও প্রচুর ভিড় হয় বলে অভিযোগ। ওই বাজার কমিটির সম্পাদক রণজিৎ গুছাইত বলেন, ‘‘বাজার কমিটির তরফে হাট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা ফের হাট চালু করে দেওয়ায় লোকজনের ভিড় জমেছিল। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Coronavirus in Midnapore Boroma Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE