—প্রতীকী চিত্র।
রাত পোহালেই দীপাবলি। কালী পুজোর বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে শুরু বাড়ি বাড়িতে হবে আতসবাজির খেলা। কিন্তু প্রতি বছরের মতো এবার খাদিকুলে দেখা যাবে না ‘ভানুমতির খেল’! কারণ, বেআইনি বাজি কারবারী কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুর কারখানাই কয়েক মাস আগে বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে। মারা গিয়েছেন ভানুও।
এগরা মহকুমা এলাকায় শব্দ বাজির ‘সম্রাট’ হিসাবে পরিচিতি ছিলেন খাদিকুলের বাসিন্দা ভানু। বাজির মশলা নিয়ে দিনরাত পড়ে থাকতেন। নতুন ধরনের বাজি তৈরি করে এই জেলা-সহ পড়শি রাজ্য ওড়িশাতেও তাঁর যথেষ্ট সুনাম ছড়িয়েছিল। বেআইনি কারবারে জড়িত থাকলেও কালী পুজোর সময় ভানুর মস্তিষ্ক প্রসূত লোহার তারের রকমারি চরকি, রকেট দর্শকদের মন জিতেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রকমারি বাজির কেরামতির জন্য কালীপুজো এবং দীপাবলিতে ভানুর কারখানায় বাজি বিক্রিতে সরগরম হয়ে উঠত। ওড়িশা, কলকাতার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এলাকায় আসতেন। কালীপুজোয় গোপীনাথপুর বাজার এলাকার একাধিক পুজো মণ্ডপে ভানু যুক্ত থাকতেন। সেই সব পুজোয় ভানু নিজেই বাজি দিয়ে আসতেন। আর বিভিন্ন বাজি ফাটানোর প্রতিযোগিতায় তাঁর ডাক পড়ত।
সেই সব আপাতত অতীত। গত ১৬ মে বেআইনি কারখানায় বিস্ফোরণে ভানু-সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তারা এখনও পর্যন্ত মৃত ভানুর স্ত্রী এবং ছেলে- সহ চারজন গ্রেফতার করেছে। জমা পড়েছে চার্জশিটও। কালী পুজোর আগের রাতে খাদিকুলে ভানুর ‘অভিশপ্ত’ কারখানায় শ্মশানের নিঃস্তব্ধতা। এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শুধু বাজি তৈরি এবং ফাটানোর লোহার কিছু সরঞ্জাম। কিছু সামগ্রী বেহাত হয়েছে। এত জনের মৃত্যু সকলের কাছে বিষাদের হলেও এলাকাবাসীর একাংশ বলছেন, ‘বাজির সম্রাট’ ভানুর মৃত্যুতে যেন একটা যুগের অবসান হয়েছে। আর পুজো এলেই ভানুর বাজির কেরামতির কথা তাদের মনে করিয়ে দেয়। খাদিকুলের বাসিন্দা অরুণ সিংয়ের কথায়, ‘‘দীপাবলিতে ভানুর বাজির প্রচুর চাহিদা থাকত। জেলা-সহ ওড়িশা রাজ্যের মানুষ এখান থেকে বাজি নিয়ে যেতেন। ভানু না থাকায় সেই বাজি কেরামতি এবার আর দেখা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy