দিঘার হোটেলে চলছে পুলিশি অভিযান। নিজস্ব চিত্র।
দেরি হলেও দিঘায় পর্যটকদের পরিচয়পত্রের নথি যাচাইয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সপ্তাহ দুয়েক আগেই এই দিঘার হোটেল থেকেই বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের দুই অভিযুক্ত তথা সন্দেহভাজন আইসিস জঙ্গিদের গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ভুয়ো পরিচয় পত্র জমা দিয়ে হোটেলে উঠেছিল তারা। বিষয়টি মাথায় রেখে সৈকত শহরে হোটেলে ঘর ভাড়া নিলেই পর্যটকদের আধার কার্ড বা সচিত্র পরিচয় পত্র যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। যে সব আধার কার্ড বা সচিত্র পরিচয় পত্র জমা পড়ছে, তা বৈধ কি না কি যাচাই করার পদ্ধতির ব্যাপারেও হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পুলিশ।
রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে দিঘা। গত ১১ এপ্রিল এখানের হোটেল থেকে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারের পরে এ বিষয় স্পষ্ট যে, পর্যটকদের ভিড়কে দুষ্কৃতীরা আত্মগোপনের আশ্রয়স্থল হিসাবে বেছে নিচ্ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পর্যটকদের নথি যাচাই না করেই ঘর দেওয়ার বিষয়ে হোটেলগুলির ঢিলেঢালা মনোভাব রয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশের তরফে নথি আপলোডের যে ‘অতিথি পোর্টাল’ চালু হয়েছিল, সেটিও ঠিক ভাবে ব্যবহার না করার অভিযোগ রয়েছে। আপাতত হোটেলগুলির এই ঢিলেঢলা মনোভাব দূর করতে তৎপর পুলিশ।
ওল্ড এবং নিউ দিঘা মিলিয়ে দু’হাজারেরর কাছাকাছি হোটেল এবং লজ রয়েছে। সেই সব হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের নির্দেশিকা যাতে সঠিকভাবে পালন করে, সে জন্য হোটেলে হোটেলে গিয়ে কড়া বার্তা দেয় দিঘা থানার পুলিশ। নিউ দিঘার এক হোটেল মালিক সৌম্য রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘হোটেলে পুলিশ এসেছিল। তারা বলে গিয়েছে, আগত পর্যটকদের ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে আধার নম্বর সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে হবে। প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতপক্ষে তার কোনও অস্তিত্ব আছে কি না। এছাড়া, অন্য পরিচয় পত্রে যে কিউআর কোড রয়েছে, তা স্ক্যান করে দেখতে হবে।’’ কয়েকজন হোটেল মালিক জানান, কারও পরিচয়পত্র নিয়ে সন্দেহ থাকলে তৎক্ষণাৎ থানায় খবর দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, থানা থেকে একটি ‘ইউজারনেম’ আর ‘পাসওয়ার্ড’ দেবে। তা দিয়ে ‘অতিথি’ পোর্টালে গিয়ে পর্যটকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপলোড করতে বলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দিঘা-শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘জেলা পুলিশ অতিথি পোর্টাল চালু করেছে। তবে সেই পদ্ধতি মেনে চলা সব হোটেলের পক্ষে সম্ভবপর হয়নি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষকে তাই এ ব্যাপারে আরও সক্রিয় হতে বলছি’’
শুধু দিঘা থানা নয়, একই রকম ভাবে দিঘা মোহনা, মন্দারমণি উপকূল থানাও এ ধরনের নজরদারি চালাতে উদ্যোগী হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপার (ড্রাগ অ্যান্ড থেরাপিউটিক) আবুনুর হোসেন বলেন, ‘‘দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর সব জায়গাতেই সব হোটেলে পুলিশ গিয়ে বোঝাচ্ছে। আইন অনুযায়ী পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য যা যা করণীয়, তা করতে বলা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy