পুলিশের ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনেও হচ্ছে জমায়েত। খোলা রাখা হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাদে অন্য সামগ্রীর দোকান। খবর পেয়ে জমায়েত সরাতে এবং দোকান বন্ধ করতে গিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন-জন প্রতিনিধি। পরিস্থিতি তো নিয়ন্ত্রণে এলই না উল্টে পুলিশ এবং জন প্রতিনিধিকে মারধর করার অভিযোগ উঠল কাঁথি এবং নন্দীগ্রামে।
কাঁথি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার কয়েকটি দোকান খোলা রাখার অভিযোগ ওঠে। ওই সব দোকানে ভিড়ও হচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে যান স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ সাবুল। অভিযোগ, সে সময় তাঁকে হেনস্থা করেন দোকানদারেরা। পরে শেখ মোমা নামে একজনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ঢুকে তাঁর উপরে চড়াও হয় এবং অনুগামীদের মারধর করে বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসী কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বুধবার রাতেই ওই কাউন্সিলর শেখ মোমা এবং অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘এলাকায় দোকানপাট খোলা রয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। তারা ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখার জন্য সতর্ক করে যাওয়ার কয়েক মিনিটের পরেই এই হামলা চলে।’’ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর এলাকায় গিয়েছিল কাঁথি থানার পুলিশ। তারা অভিযান চালিয়ে সেখানে সবকটি দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলরের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
বুধবারের ওই ঘটনার পরেই বৃহস্পতিবার খেলা বন্ধ করতে গিয়ে নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যেই অনেকে জমায়েত হয়ে নন্দীগ্রামের জৈনপুর এলাকায় ফুট টেনিস খেলছিল। রেয়াপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ এলাকায় টহলদারির সময় তাদের দেখতে পেয়ে খেলা বন্ধের নির্দেশ দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাধে। অভিযোগ, পরে এলাকাবাসী পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এবং তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন। ভাঙা হয় পুলিশের গাড়িও। ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের একটি গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশ একটি মামলা রুজু করেছে।’’
অন্য দিকে, এ দিন সন্ধ্যায় আবার নন্দকুমারে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বাসিন্দার বিরুদ্ধে। লকডাউন সবাই মানছেন কি না, সে নিয়ে এলাকায় টহল দেওয়ার সময় তারা নন্দকুমার থানার হাঁসগেড়িয়া বাজার এলাকায় ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে কয়েকজনকে তাস খেলতে দেখে। লকডাউনের বিষয়ে পুলিশ তাদের বোঝাতে গেলে বচসা বাধে। অভিযোগ, ওই যুবকেরা ও এলাকাবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। আক্রমণে আহত হন তিন পুলিশকর্মী। আহত পুলিশকর্মীরা নন্দকুমার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম এবং নন্দকুমারে পুলিশের উপর হামলায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy