Advertisement
০১ মে ২০২৪
Fraud Case

আঙুলের ছাপ নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ! পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়ায় শোরগোল

হেঁড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে খবর, একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের অপারেটরকে থানায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে।

Fraud case

প্রতারিতরা দল বেঁধে অভিযোগ করেছেন পুলিশের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হেঁড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩০
Share: Save:

ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবার আড়ালে ফিঙ্গারপ্রিন্টের অপব্যবহার করে বেশ কয়েক জন গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়া এলাকায়। মঙ্গলবার এ নিয়ে ওই গ্রাহক সেবাকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রতারিতরা। খবর পেয়ে হেঁড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করেছে। সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত গ্রাহক কেন্দ্রের অপারেটার বেশ কিছু দিন ধরেই সাধারণ মানুষদের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে কেওয়াইসি নেওয়ার নামে অথবা নানা ছুতোয় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলছিলেন। অনেকে টাকা জমা দিতে এলেও সেই টাকা আদতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়নি। এ নিয়ে গ্রাহকেরা জানতে চাইলে তাঁদের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হত বলে অভিযোগ। তবে গত শুক্রবার এক ব্যক্তির টাকা প্রতারণা করতে গিয়েই প্রথম বার সন্দেহের তালিকায় চলে আসেন ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের অপারেটর। হেঁড়িয়ার জরারনগর গ্রামের বাসিন্দা মিলন প্রধানের অভিযোগ, “আমার বাবা শুক্রবার ওই গ্রাহক কেন্দ্রে ১০ হাজার টাকা তুলতে যান। কিন্তু সার্ভারের সমস্যা বলে বার বার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়েও কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। তবে মোবাইলে মেসেজ আসে যে অ্যাকাউন্ট থেকে দুই দফায় ১০ হাজার এবং ২৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আমি ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে চাপাচাপি করতেই ১০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২৫ হাজার টাকার দেওয়া হয়নি।’’

মিলন আরও জানান, তিনি মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের মূল ব্যাঙ্কে গিয়ে নিশ্চিত হন যে তাঁর বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তার পরই হেঁড়িয়া পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সার্ভার ডাউন বলে বেশ কিছু দিন যাবৎ একই ভাবে আরও বহু মানুষের টাকা প্রতারণা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ আর এক প্রতারিত গ্রাহক নমিতা জানা বলেন, “আমি গত ডিসেম্বরে ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে। সেই সময় যান্ত্রিক সমস্যা জানিয়ে বই আপডেট করেনি। আজ সব কিছু জানতে পেরেই ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানলাম যে, আমার নামে কোনও টাকা জমা পড়েনি।’’

পেশায় রিকশাচালক আবু সামাদেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ৩৫ হাজার টাকা গিয়েছে। আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আমার অজ্ঞাতে ওই টাকা সরিয়ে ফেলেছে অভিযুক্ত। আজ অন্যদের মুখে জানতে পেরে ব্যাঙ্কে গিয়ে আমার টাকা তুলে নেওয়ার কথা জানতে পেরেছি। এর পরেই আমি থানায় এসে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ বস্তুত, এই প্রতারণার খবরে একের পর এক গ্রাহক ব্যাঙ্কে ছুটে গিয়েছেন এবং খবর নিয়ে জানতে পারেন যে তাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার পরেই তাঁরা দল বেঁধে গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

হেঁড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে খবর, একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের অপারেটরকে থানায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এক পুলিশ আধিকারিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud Case Bank Fruad Purba Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE