Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গাছ লাগিয়েই জীবনের রসদ পান সাবিত্রীদেবী

তিনি যেখানেই ঘুরতে গিয়েছেন, সেই জায়গার গাছ সংগ্রহ করে এনেছেন। অসম হোক বা উত্তরপ্রদেশের লখনৌ অথবা ওড়িশার চাঁদিপুর— বিভিন্ন জায়গার হরেক প্রজাতির গাছ সংগ্রহই তাঁর নেশা। বিলুপ্তির পথে এমন অনেক প্রজাতির গাছও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে।

গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সাবিত্রীদেবী। — নিজস্ব চিত্র।

গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সাবিত্রীদেবী। — নিজস্ব চিত্র।

সুমন ঘোষ
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০২:০০
Share: Save:

তিনি যেখানেই ঘুরতে গিয়েছেন, সেই জায়গার গাছ সংগ্রহ করে এনেছেন। অসম হোক বা উত্তরপ্রদেশের লখনৌ অথবা ওড়িশার চাঁদিপুর— বিভিন্ন জায়গার হরেক প্রজাতির গাছ সংগ্রহই তাঁর নেশা। বিলুপ্তির পথে এমন অনেক প্রজাতির গাছও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। হুমগড়-চাঁদাবিলা হাইস্কুলের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষিকা সাবিত্রী ষন্নিগ্রাহী সম্প্রতি তাঁর সংগ্রহ থেকে ৯৭টি গাছের চারা মেদিনীপুর কলেজকে দান করলেন।

অবসরের পরে এখনও তিনি স্কুলে পড়াচ্ছেন। যদিও পড়ানোর ব্যস্ততার মাঝেও গাছের পরিচর্যায় তিনি ঠিক সময় বের করেন। সাবিত্রীদেবীর বাড়িতে রয়েছে প্রায় ৪০০টি প্রজাতির গাছ। নিজের স্কুলে আগেই গাছ লাগিয়েছেন। এ বার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা বিলি করাই তাঁর লক্ষ্য। মেদিনীপুর কলেজের পর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুল কলেজকে গাছের চারা দিতে চান সাবিত্রীদেবী।

সাবিত্রীদেবীর কথায়, “সারা জীবনের সংগ্রহ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে যেতে না পারলে কীসের আনন্দ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার কাছে এমন অনেক প্রজাতির গাছ রয়েছে যা সহজে আশপাশে দেখতে পাওয়া যায় না। স্কুল-কলেজে সেগুলি দিলে ছাত্রছাত্রীরা সহজেই সেই সব গাছের কথা জানতে পারবে। এর থেকে বড় পাওয়া কী হতে পারে।”

অসমের পাহাড়ী কাঞ্চন, লখনৌর হাড়জোড়া, দার্জিলিঙের এরিয়াল ক্যাকটাস, চাঁদিপুর থেকে ছাগলপদী, রাজস্থানের আকাল ফসিল পার্কের মতো প্রজাতির গাছ সাবিত্রীদেবীর সংগ্রহে রয়েছে। এ ছাড়াও ৭০০ বছরের পুরনো বাবলা গাছের ছাল, থর মরুভূমির বালি, আন্দামানের সামুদ্রিক প্রাণীর খোলও তিনি সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন।

সাবিত্রীদেবীর দেওয়া গাছ মেদিনীপুর কলেজের চারিদিকে, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ভেষজ উদ্যানে ও ছাত্রদের হস্টেলের চারপাশে লাগানো হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘একজন ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন গাছের চারা সংগ্রহ করেছেন, এটা খুবই
ভাল বিষয়।’’

গাছ সংগ্রহের কাজে সাবিত্রীদেবীকে উৎসাহ দিয়েছেন স্বামী শ্যামলকান্তি ষন্নিগ্রাহী। শ্যামলকান্তিবাবু হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কারও মিলেছে অনেক। তাঁর কথায়, “যেখানে কোনও গাছ নেই, সেখানে কেউ গাছ লাগানোর কথা বললে আমি ছুটে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

trees plant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE