করোনার কারণে ২ বছর বন্ধ ছিল এই পরীক্ষা। —নিজস্ব চিত্র।
২ বছর পর আবার রাজ্য জুড়ে হচ্ছে প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়াদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা— বৃত্তিপরীক্ষা। এই পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদের হাত ধরে। তবে গত ২ বছর অতিমারি করোনা জেরে এই পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এ বার বিপুল কলেবরে রাজ্য জুড়ে ৫ দিনের বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হল বুধবার থেকে। রাজ্য জুড়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
পর্ষদ সূত্রে খবর, সারা রাজ্যে একই সঙ্গে একই প্রশ্নপত্রে আয়োজিত হচ্ছে এই বৃত্তি পরীক্ষা। প্রাথমিকের শিশুদের প্রথম বার বাইরের পরীক্ষায় বসার সুযোগের পাশাপাশি নিজেকে যাচাই করারও সুযোগ থাকে এই পরীক্ষার মাধ্যমে। আগে রাজ্যের সেরা কৃতিদের বছরে দশ টাকা করে দেওয়া হত। এখন সেটা হয়েছে এক হাজার দুশো টাকা। এ ছাড়াও প্রতিটি জেলার সেরাদের ছ’শো টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ সালে রাজ্যে এমন আটশো পঞ্চান্ন জনকে কৃতিকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ভোলসারা হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ বেতাল বলেন, ‘‘৮০’র দশকে সেন্ট্রাল পরীক্ষা তুলে দেওয়ার পর জনপ্রিয় শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী তথা সমাজকর্মী ডঃ সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রমুখ সমাজের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষানুরাগীরা রাজ্য জুড়ে মেধা পরীক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলনের ফলেই গঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদ। এই পর্ষদের তত্ত্বাবধানেই ১৯৯২ সাল থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে আগে এই পরীক্ষায় অংশ নিত ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। করোনার ধাক্কায় তা এ বার প্রায় অর্ধেক কমে গিয়েছে।’’ শিক্ষক মহল সূত্রে খবর, এ বছর প্রায় দেড় লক্ষ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে।
এই পর্ষদে কোনও সরকারি অনুদান নেই। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েই পর্ষদ চলছে। পরীক্ষার জন্য ফি তিরিশ টাকা। পরীক্ষায় কৃতীদের কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা কেন্দ্রীয় কমিটি পৃথক স্কলারশিপ দেয়। পরবর্তী সময়ে এঁদের অনেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার এই পরীক্ষার দায়িত্ব হাতে নিলে আরও বহু ভাল ছাত্রছাত্রীর আত্মপ্রকাশ ঘটার সুযোগ থাকবে। তবে তা না হওয়া পর্যন্ত তহবিল প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সেই সহযোগিতা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy