Advertisement
E-Paper

রশি না ছুঁয়েই ‘লাইভ’ রথ দেখা

মেদিনীপুর শহরে জগন্নাথ মন্দিরের সামনে অস্থায়ী ছাউনিকে 'মাসি বাড়ি' করে সন্ধ্যায় সেখানেই জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার বিগ্রহ এনে রাখা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০১:৪৮
খড়্গপুরের জগন্নথ মন্দিরে রথের উপাচার পালন করা হল কয়েকজনকে নিয়ে। ছবি: কিংশুক আইচ

খড়্গপুরের জগন্নথ মন্দিরে রথের উপাচার পালন করা হল কয়েকজনকে নিয়ে। ছবি: কিংশুক আইচ

চাকা গড়াল না, টানা হল না রশি। রথের মেলায় জিলিপি, পাঁপড় ভাজাও নেই। তবে আচারে ঘাটতি ছিল না। স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে শাস্ত্রবিধি মেনেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে পালিত হল রথযাত্রা উৎসব। পথে নেমে না হলেও টিভিতে বা মোবাইলে হল জগন্নাথ দর্শন।

মেদিনীপুর শহরে জগন্নাথ মন্দিরের সামনে অস্থায়ী ছাউনিকে 'মাসি বাড়ি' করে সন্ধ্যায় সেখানেই জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার বিগ্রহ এনে রাখা হয়। বসেনি মেলাও। তবে শহরবাসীর জন্য রথের অনুষ্ঠান অনলাইনে প্রদর্শনের ব্যবস্থা ছিল। পুরসভার ফেসবুক পেজ ও স্থানীয় কেবল্ চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার দেখা গিয়েছে। উল্টোরথ পর্যন্ত রোজকার সন্ধ্যারতিও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। মেদিনীপুর সদর মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘করোনা সতর্কতায় মেদিনীপুরে রথের মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

ঘাটাল মহকুমায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৫টি রথ উৎসব হয়। এ বার কোথাও রথ টানা হয়নি। বসেনি মেলা। তবে ঘাটালের বাজারবুড়ি মায়ের মন্দির, খাঞ্জাপুর, হরিরামপুর, বেলতলা, তিওরবেরিয়া-সহ কিছু জায়গায় পুজো দিতে অনেকে আসেন। অনেক জায়গায় গাছের চারা বিলি হয়। গড়বেতার হুমগড়ের চাঁদাবিলায় একটি আশ্রমের রথ ৫০ ফুট টানার পর বিগ্রহ গাড়িতে চাপিয়ে মাসি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রশিতে টান পড়েনি দাঁতন, কেশিয়াড়ি, বেলদার সেনবাড়ির রথেও। তবে সমাজ মাধ্যম ভরেছে রথের শুভেচ্ছায়।

খড়্গপুরে নিউ সেটেলমেন্টের বড় জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রায় ওড়িয়া রীতিতে 'ছেড়া পোহরা' মাধ্যমে বিগ্রহ বের করে তিনটির বদলে একটি রথে চাপিয়ে মন্দির চত্বরেই ঘোরানো হয়। রশিতে টান দিয়ে রথের উদ্বোধন করেন বিধায়ক প্রদীপ সরকার। ছিলেন ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান। বাঁশের ব্যারিকেড থাকায় দূর থেকেই ভক্তেরা রথ দর্শন করেন। চণ্ডীপুরের ২০৩ বছরের জগন্নাথ মন্দিরের রথও মন্দির চত্বরেই বেরোয়। তালবাগিচার রথতলাতেও এক ছবি। শহরের ওড়িয়াভাষিদের আবেগে অবশ্য ঘাটতি ছিল না। স্কুল শিক্ষক দ্বারকেশপ্রসাদ পট্টনায়েক বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে মনকে বুঝিয়েছিলাম। এক মুহূর্ত হলেও রথের রশি টানতে পারাটাই বড় পাওনা।’’

ঝাড়গ্রামে বেশিরভাগের চোখ ছিল সমাজ মাধ্যমে। পথে রথ দেখতে না পাওয়ার আক্ষেপ মিটিয়েছে একাধিক নিউজ পোর্টাল ও নিউজ পেজ। পুরীর রথযাত্রা লাইভ দেখানোর পাশাপাশি দেখানো হয়েছে বেলিয়াবেড়া, গোপীবল্লভপুরের রথ। লালগড় রাজপরিবারের কুলদেবতা রাধামোহনকে রথে তুলে বিশেষ পুজোর পরে মন্দিরেই অস্থায়ী মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রীপাট গোপীবল্লভপুরের ৪০০ বছরের রথ উৎসবে এই প্রথম রথে চেপে মাসির বাড়ি গেলেন না জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা। রথে মন্দির প্রদক্ষিণের পর মন্দিরেই অস্থায়ী মাসির বাড়িতে তাঁদের রাখা হয়।

মেলা না বসায় পাঁপড় ভাজা আর জিলিপির দোকান জমেনি। ঝাড়গ্রামে কলেজ মোড়ে মিষ্টি দোকানের মালিক দেবীপ্রসাদ কুণ্ডু বলেন, ‘‘গতবছর রথের বিকেলে ৪ হাজার জিলিপ বিক্রি করেছিলাম। এ বার লোকই নেই। এক হাজার পিস করেছি।’’ গোয়ালতোড়ের মিষ্টান্ন বিক্রেতা দীপঙ্কর দত্তেরও বক্তব্য, ‘‘এ বার বেশি জিলিপি করার ঝুঁকি নিইনি।’’

ঝাড়গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পৌলমি দে বলছিল, ‘‘ফেসবুকে রথ দেখলাম, আর বাড়িতে এনে জিলিপি খেলাম।’’

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Rath Yatra 2020
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy