E-Paper

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলযাত্রা

কাঁথি হাই স্কুল থেকে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় কিংবা কিশোর নগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদন— প্রায় সব স্কুলের সামনেই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হয় পড়ুয়াদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৪
স্কুল ছুটির টাইমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনে নেই পুলিশ।। কাঁথি শহরের একাধিক স্কুলের সামনে সেই চিত্র দেখা গেল।

স্কুল ছুটির টাইমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনে নেই পুলিশ।। কাঁথি শহরের একাধিক স্কুলের সামনে সেই চিত্র দেখা গেল। ছবি শুভেন্দু কামিলা।

এমনিতেই শহরের রাস্তায় পায়ে হেঁটে চলাচল দুষ্কর। বেপরোয়া অটোর ধাক্কায় কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে এক দশম শ্রেণির এক ছাত্রের। তার পরেও, শহর জুড়ে একাধিক স্কুলের সামনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কোনও হেলদোল নেই। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই স্কুলে যেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। চিত্রটা কাঁথি শহরের।

কাঁথি হাই স্কুল থেকে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় কিংবা কিশোর নগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদন— প্রায় সব স্কুলের সামনেই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হয় পড়ুয়াদের। বিক্ষিপ্ত ভাবে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে স্কুল চত্বরে। অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল শুরু এবং ছুটি হওয়ার সময় এককালীন পড়ুয়া এবং বহু অভিভাবক গেটের সামনে ভিড় জমান। সেই সঙ্গে চলে টোটো, অটো এবং মোটরবাইকের দাপট। ফলে, রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে হামেশাই দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে লকডাউনের আগে কাঁথি শহরের ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবনের বেপরোয়া অটোর ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল চন্দন মিশ্র (১৫) নামের দশম শ্রেণির এক পড়ুয়ার। অভিযোগ, স্কুলের সামনে গজিয়ে উঠেছে বিশাল অটো-স্ট্যান্ড। এর ফলে যানজট লেগেই থাকে। অনেকেই যানবাহনের গতি বুঝতে ব্যর্থ হয়। শুধু ওই স্কুলই নয়, গোটা কাঁথি শহরে মোট সাতটি হাই স্কুল রয়েছে। যেগুলি প্রায় সবক’টি শহরের মূল রাস্তার গা ঘেঁষেই অবস্থিত। একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চার বছর আগে দুর্ঘটনার পর কাঁথি থানার পক্ষ থেকে প্রতিটি স্কুলের সামনে স্কুল শুরু এবং ছুটি হওয়ার সময় সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছিল। প্রথম প্রথম বছরখানেক তাঁরাই স্কুলের গেটের সামনে নিয়মিত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতেন। তারপর যেই কী সেই দশা! অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘‘প্রায় সময় নিজেদেরই হাত দেখিয়ে মোটরবাইক কিংবা টোটো-অটোকে দাঁড় করাতে হয়। তারপর ছেলেমেয়ের হাত ধরে রাস্তায় পার করাতে হচ্ছে।’’

টোটো-অটোর গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও সতর্কতামূলক বোর্ড পুরসভা কিংবা থানার পক্ষ থেকেও লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের সমস্যার কথা মানছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষও। এ ব্যাপারে কাঁথি হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা শাসমল বলছেন, ‘‘স্কুলের গেটের সামনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য আগেও বলেছি। ইদানিং দেখছি কখনও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়, আবার কখনও নিজেদের উদ্যোগী হয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ঢুকতে ও বেরোতে সহযোগিতা করতে হয়। তাই এ ব্যাপারে আমরা আরেকবার পুরসভা এবং কাঁথি থানাকে জানাব বলে ঠিক করেছি।’’

এ প্রসঙ্গে কাঁথি পুরসভার পুর-প্রধান সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘‘সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকেই পুরসভা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। স্কুল শুরু এবং ছুটি হওয়ার সময় ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের যে সমস্যা হয়, সে ব্যাপারেও আমরা নজর রেখেছি।’’ এ ব্যাপারে কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাস বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক সভা কিংবা কর্মসূচি থাকলে সে ক্ষেত্রে অনেকাংশে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে স্কুলগুলি সামনে সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়ন করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Traffic Police Contai

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy