ট্রেন ঢুকতেই শুরু হুড়োহুড়ি। উঠল নিজস্বীও। হিজলি স্টেশনে। বুধবার। ছবি: কিংশুক আইচ
প্রস্তুতিতে ফাঁক ছিল না। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হতেই সামনে এল সমন্বয়ের অভাব। বচসায় জড়ালেন পুলিশ ও পরিবহণ আধিকারিকেরা।
কথা ছিল, বিধি মেনেই ফিরবেন ওরা। দেখা গেল, ভেলোর থেকে হিজলি ট্রেন সফরেই হয়েছে যথেচ্ছ নিয়মভঙ্গ।
চিকিৎসার জন্য যাওয়া রোগী ও তাঁদের পরিজন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ভেলোর থেকে নিয়ে ট্রেন এ দিন খড়্গপুরের হিজলি পৌঁছয় দুপুর ৩টে নাগাদ। সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল প্রশাসন। কাটা হয়েছিল গণ্ডি। টেবিলে নাম নথিভুক্ত, থার্মাল স্ক্যানিং থেকে ফুল-চকোলেট দিয়ে বরণ—সবই ছিল। এমনকি, ট্রেনের যাত্রীসংখ্যা ১২০৭ জন থেকে বেড়ে ১৫২১ জন হয়েছে মঙ্গলবার রাতে এ কথা জানার পর বাসের সংখ্যা ৪০ থেকে বাড়িয়ে ৬০ করা হয়েছিল। এই বাসগুলি করেই রোগী, পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন।বাইরে ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। মোতায়েন ছিল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার ছাড়াও হাজির ছিলেন রেলের কর্তারা।
ট্রেন স্টেশনে পৌঁছতে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে শুরু হয় বরণ। অভিযোগ, সামাজিক দূরত্বের বিধি না মেনেই বরণ চলে। এরপর ধীরে ধীরে প্রকট হয়েছে সমন্বয়ের অভাব। ডানকুনির বৃদ্ধ অসুস্থ দুলাল কুণ্ডুর শ্যালক অভিজিৎ কর্মকার বলেন, “জামাইবাবুর দুই পা অসাড়। গোটা কামরা খালি হয়ে গেল। আধঘন্টা অপেক্ষা করছি তা-ও স্ট্রেচার পেলাম না!” এক সময়ে জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে বাস নিয়ে দুর্ভোগ দেখা যায়। এদিক-ওদিকে ঘুরেও বাস না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন হুগলির বাসিন্দারা। পরে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবহণ আধিকারিকের বচসা বেধে যায়।
কেন সমন্বয়ের অভাব? জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “আসলে ১৫২১জন যাত্রী একসঙ্গে আসায় সবসময় তো সামাজিক দূরত্ব বজায় সম্ভব নয়। কিন্তু তার বেশি যাত্রী ছিল কিনা সেটা পরে হিসাব কষলে বোঝা যাবে। এক-এক জন করে যাত্রীর স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে বাসে ওঠায় বাস ছাড়তে সময় লেগেছে। কিন্তু সমন্বয়ের অভাবের বিষয় জানা নেই।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার চারটি মহকুমার বাসিন্দাদের লালরস পরীক্ষা হবে।
ট্রেনে ওঠার পর থেকেই অবশ্য যাত্রীদের মধ্যে সঞ্চিত হচ্ছিল। বলা হয়েছিল ট্রেনে থাকবে না মাঝের বার্থ। অথচ এ দিন যে ট্রেন এসেছে তাতে ছিল মাঝের বার্থ। একটি কোচের প্রতিটি কোচে ঠাসাঠাসি করেই আসতে হয়েছে যাত্রীদের। মুখে থাকেনি মাস্ক। পরিজনেদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ভেলোরে আটকে থাকা বারুইপুরের মেঘনাদ বৈদ্য, ভাঙরের রসুলউদ্দিন সর্দারের ক্ষোভে উগরে বলেন, ‘‘এত দিন ভেলোরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সুস্থ ছিলাম। ট্রেনে সব ঘেঁটে গেল।”
রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “প্রথমে নির্দেশিকা ছিল মাঝের বার্থ থাকবে না। এখন নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে কিছু সিট কমিয়ে বুকিং করতে। এর একটি হিসাব রয়েছে। এক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে দেখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy