ভরা শ্রাবণেও হচ্ছে নাড়া পোড়ানো! সাম্প্রতিক কালে যা দেখা যায়নি, বলছে কৃষি দফতর।
শ্রাবণের অঝোর ঝারায় মাঠেঘাটে, খালবিলে জল থইথই অবস্থা দেখতে অভ্যস্ত সকলে। এইসময় বর্ষায় জমিতে জল জমার পর ধান চাষে পুরোদমে নেমে পড়েন চাষিরা। আমনের বীজতলা, চাষের উপযোগী জমি তৈরি-সহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন চাষিরা। সেই ভরা শ্রাবণেই দেখা নেই টানা বৃষ্টির। বিক্ষিপ্ত ভাবে দু'এক পশলা বৃষ্টি হলেও, চাষের কাজে যা খুবই অল্প বলে মনে করছেন চাষিরা। শ্রাবণেও ধান জমি ধূ ধূ প্রান্তর। কে বলবে এখন বর্ষাকাল!
অগত্যা নাড়া পোড়াচ্ছেন চাষিরা। গড়বেতা ১ ও গড়বেতা ২ (গোয়ালতোড়) ব্লকের কিছু কিছু এলাকায় কৃষি জমিতে নাড়া পোড়ানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। শ্যামনগর, বড়মুড়া, আমকোপা, পিয়াশালা প্রভৃতি অঞ্চলে অল্প বৃষ্টিতে ভেজা জমির মধ্যেই ফসলের অবশিষ্ট অংশ ও গাছের গোড়ায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন চাষিরা। মঙ্গলবার কয়েকজন চাষি বললেন, "কী হবে এসব জঞ্জাল রেখে? বৃষ্টিই তো নেই, ধান চাষ কী ভাবে করব বুঝতে পারছি না। জলের অভাবে আনাজ চাষও মার খাবে। যদি পরে বৃষ্টি হয় তখন ভাবব।" বর্ষাকালে বৃষ্টির অভাবে শুকনো খটখটে জমিতে নাড়া পুড়িয়ে গড়বেতা, গোয়ালতোড়ের চাষিরা বলছেন, শ্রাবণ মাসে চাষের কাজ না করে জমিতে গিয়ে নাড়া পোড়াতে কার ভালো লাগে!
কৃষি দফতরের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও চাষিরা নাড়া পোড়াচ্ছেন। কিন্তু শ্রাবণ মাসে নাড়া পোড়ানোর এই ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলে স্মৃতি হাতড়ে জানাচ্ছেন কৃষি আধিকারিকেরা। তার কারণ হিসাবে বৃষ্টির প্রচুর অভাবকেই মূলত দায়ী করছেন তাঁরা। অন্যান্য বছর এই সময়ে যা বৃষ্টি হয়, তার অর্ধেকও হয়নি এ বার। ফলে আমন ধান চাষ শুরু করতে দেরি করছেন অনেকেই।
গড়বেতা ১ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা তুষার পাত্র বলেন, "নাড়া পোড়ানো বন্ধে নিয়মিত সচেতনতার প্রচার করা হয়। আমরা অভিযানও করি। নাড়া পোড়ানো অনেকটাই রোধ করা গিয়েছে। তবে শ্রাবণে নাড়া পোড়ানোর খবর এই প্রথম শুনছি।" প্রায় একই মত গড়বেতা ২ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা সন্তু নন্দী বলেন, "কম হলেও বৃষ্টি হচ্ছে, মাটি তো ভেজা, তাহলে কী ভাবে নাড়া পোড়ানো হচ্ছে? খবর নিয়ে দেখছি।"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)