Advertisement
E-Paper

১৯ দিন পরেও খোঁজ মিলল না আবাসিক ছাত্রের

নিখোঁজ হওয়ার ১৯ দিন পরেও হদিস মেলেনি সবংয়ের স্কুলের আবাসিক ছাত্র রোহন মিদ্যার। সবংয়ের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রোহন গত ৩০ জুন স্কুল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৮

নিখোঁজ হওয়ার ১৯ দিন পরেও হদিস মেলেনি সবংয়ের স্কুলের আবাসিক ছাত্র রোহন মিদ্যার। সবংয়ের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রোহন গত ৩০ জুন স্কুল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়। বছর চোদ্দোর ওই ছাত্রের বাড়ি ডেবরার পাইকপাড়ি গ্রামে। গত ১ জুন সবং থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন রোহনের বাবা রণজিৎ মিদ্যা। কিন্তু পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনও খোঁজ মেলেনি রোহনের।

ওই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অত্যাচারের জন্যই রোহন নিখোঁজ হয়েছে। পুলিশ ঠিকমতো তদন্ত করছে না বলেও তাঁদের দাবি। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হল, মাস ছ’য়েক আগে ভর্তি হওয়া রোহন পড়াশুনোয় অমনোযোগী ছিল। সে নিজেই পালিয়েছে বলেও দাবি স্কুলের। একই অনুমান সবং থানার পুলিশেরও। দশগ্রামের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান বলেন, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম আমাদের ত্রুটি রয়েছে। কিন্তু সকলের থেকে শুনেছি রোহন পড়াশুনো করতে চায় না। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গেও ওর গোলমাল রয়েছে বলে ধারণা। ওর লেখা চিঠিতেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে। মনে হচ্ছে রোহন পালিয়ে গিয়ে কোথাও কাজ করছে।’’ এ সব অবশ্য মানতে নারাজ রোহনের বাবা পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান রণজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমার বড় ছেলে দুষ্টু ছিল না। যদি স্কুলে ওর আচরণ ঠিক নাই থাকে তাহলে কেন স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের আগে তা জানালেন না।’’

গরমের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিল রোহন। গত ২০ জুন সে স্কুলের ছাত্রাবাস ফেরে। স্কুল সূত্রে খবর, ২৭ জুন ওই ছাত্রের কাছে একটি আইপড পাওয়া যায়। এ নিয়ে শিক্ষকেরা বকুনি দিয়েছিলেন রোহনকে। ৩০ জুন ভোরে প্রার্থনার সময় রোহন না আসায় খোঁজ শুরু হয়। দেখা যায় নিজের ঘরে রোহন নেই। বাড়িতে জানিয়েও রোহনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় স্কুল ও পরিবারের তরফে সবং থানায় পৃথক দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পরে ছাত্রাবাসে রোহনের ঘর থেকে একটি চিঠি মেলে। রোহনের হাতে লেখা সেই চিঠিতে রয়েছে, ক্যান্সার হওয়ায় একমাস ধরে তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। তাই বাবা-মায়ের কষ্টের কথা ভেবে সে চলে যাচ্ছে। তার জন্য টাকা নষ্ট না করে ভাইকে পড়ানোর কথা লিখেছে রোহন।

রোহনের পরিবারের অবশ্য দাবি, তাদের ছেলের কোনও অসুখ ছিল না। গরমের ছুটিতে একমাস বাড়িতে থাকার সময়ও কোনও দিন মুখ থেকে রক্ত বেরোতে দেখা যায়নি। রোহনের কাছ থেকে আইপড পাওয়ার পরেও সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন অভিভাবকদের জানাননি সেই প্রশ্নও উঠেছে। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগলবাবুর বক্তব্য, ‘‘অনেক ছাত্রের কাছেই এমন জিনিস পাওয়া যায় যা স্কুলে আনা ঠিক নয়। বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিয়ে তাই আমরা আইপড স্কুলের হেফাজতে রেখে দিয়েছিলাম।’’

সবংয়ের এই স্কুল থেকে একসময় বহু কৃতী ছাত্র উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রাক্তনীদের বিশ্বাস, আশ্রমিক ভাবনায় চলা ওই স্কুলে এখনও ঐতিহ্য বজায় রয়েছে। তাই রোহন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় স্কুলের ভূমিকা রয়েছে বলে তাঁরা মানতে নারাজ। একই মত এলাকাবাসীও। ওই স্কুলের প্রাক্তনী স্থানীয় চিকিৎসক সুজয়রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘স্কুল তো জেলখানা নয় যে সেখানে উঁচু পাঁচিল দিয়ে ছাত্রদের আটকে রাখা যাবে। ওই ছাত্র অমনোযোগী ছিল বলে শুনেছি। গরমের ছুটির পরে তার কাছে আইপড পাওয়া গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত।’’

Student rohon kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy