লাদাখে দুর্ঘটনায় মৃত বাপ্পাদিত্য খুটিয়া। নিজস্ব চিত্র।
ছেলের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার সকালে বার বার ছেলেকে ফোন করেও পাননি বাবা মা। বিপদ কিছু একটা যে ঘটেছে তা বুঝতে পেরেছিলেন পরিবারের সকলেই। কিন্তু ছেলে যে ট্রাক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা যাবেন তা আঁচ করতে পারেননি কেউই। শুক্রবার পারতাপুরের শিবির থেকে যাওয়ার সময় লাদাখের রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি সেনা ট্রাক। রাস্তা থেকে শিয়ক নদীতে পড়ে যায় ওই ট্রাকটি। তার জেরে সাত জওয়ান মারা গিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর শহরের বারবেটিয়া এলাকার যুবক বাপ্পাদিত্য খুটিয়া। তাঁর মৃত্যুর খবর শুক্রবার মাঝরাতে জানতে পেরেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাস খানেক আগে খড়গপুরের বাড়িতে ফিরেছিলেন বাপ্পাদিত্য। বাড়িতে জানিয়েছিলেন, এ বার তাঁরা প্রশিক্ষণ শেষে যাবেন সিয়াচেনে। সেই মতো রওনাও দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ দিতে হল তাঁদের। বাপ্পাদিত্যর বাবা সুকুমার খুটিয়া বললেন, ‘‘মাস খানেক আগে ও বাড়িতে এসেছিল। তখন বলেছিল, ‘এ বার সিয়াচেন যেতে হবে।’ ওরা প্রশিক্ষণ শেষ করে সিয়াচেন যাচ্ছিল। কিন্তু ধসের জেরে ওদের গাড়িটা খাদে পড়ে যায়। আমরা ওর সঙ্গে ওই দিন কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও কেউ ধরেনি। তখনই বুঝেছিলাম, কিছু একটা বিপদ হয়েছে। তবে আমার ছেলেটাই যে চলে যাবে এটা ভাবতে পারিনি।’’
সেনাবাহিনীতে ল্যান্সনায়েক পদে ছিলেন বাপ্পাদিত্য। বাড়িতে বাবা, মা ছাড়াও স্ত্রী এবং ১১ মাসের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে তাঁর। বাপ্পাদিত্যর ভাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি থাকেন সেকেন্দ্রাবাদে। দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফিরছেন তিনি। বাপ্পাদিত্যর মা রিনা বলছেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার কথা হয়েছিল। ও তখন বলেছিল, ‘ট্রেনিং শেষ। আমরা কাল ফিরব।’ কিন্তু ‘ফিরব’ বলে ও কোথায় চলে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy