ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী বীরসিংহ যাবেন। তার আগে প্রস্তুতি বৈঠকে থাকলেন না তৃণমূল বিধায়ক। বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলের নেতারা। দখল হয়ে গেল শাসক দলের কার্যালয়ও।
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, বিদ্যাসাগরের দু’শোবছরের জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে বীরসিংহে উপস্থিত থাকবেন তিনি। শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। গত ২৭ অগস্ট জেলাশাসক ঘুরে গিয়েছেন বীরসিংহ। রবিবার প্রস্তুতি বৈঠক করতে সেখানে যাওয়ার কথা ছিল বিধায়ক শঙ্কর দোলুই-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের। কিন্তু কথা থাকলেও বিধায়ক গেলেন না। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধায়কের অনুপস্থিতিতে হেনস্থার শিকার হতে হয় তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি-সহ অন্য নেতাদের। কেন বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান এত উপেক্ষিত, কেন বিধায়ক অনুপস্থিত— এ সব প্রশ্ন তুলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা শাসক দলের নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। সন্ধ্যায় বিজেপির লোকজন বীরসিংহে তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করে নেয়। তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ বলেন, “আমাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বিজেপির লোকজন সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করেছে। বৈঠক করা যায়নি।” দিলীপ বলেন, “বীরসিংহে পার্টি অফিসটি দখল করে নিয়েছে বিজেপি। পুলিশকে জানিয়েছি।”
কেন বৈঠকে গেলেন না? শঙ্কর বলেন, ‘‘দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় যেতে পারিনি।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন মেদিনীপুরে সার্কিট হাউজে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই ছিলেন শঙ্কর। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সফর সরকারি অনুষ্ঠান। স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষই বৈঠক করছিলেন। বৈঠকে যা হল সেটা বীরসিংহের লজ্জা।’’ তবে বিধায়কের অনুপস্থিতি সম্পর্কে অন্য ব্যাখ্যাও শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বললেন, “কিছু একটা হবে, আশঙ্কা ছিল। দলের মিটিং ছিল ঠিক। তবে এটা সামলেও বৈঠকে যাওয়া যেত। ঝামেলা এড়াতেই তিনি না আসার সিদ্ধান্ত নেয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে মাথায় রেখে বীরসিংহের মানুষ কী চাইছেন-সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে এ দিন এক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বিধায়ক যাননি। তবে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে বীরসিংহ ভগবতী হাইস্কুলে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। বিকেল সাড়ে তিনটেয় শুরু হয় সভা। স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামের উন্নয়নের কাজ, বিদ্যাসাগর মেলা, বাসস্ট্যান্ড, রাস্তাঘাট সহ নানা বিষয়ে গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। শাসক দলের নেতাদের দুর্নীতিতে বাড়ছিল ক্ষোভ। এ দিনের বৈঠকে তৃণমূল নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দেখে মেজাজ হারায় বীরসিংহ। গ্রামবাসীরা জানান, ক’বছরে বীরসিংহে এক ছটাক উন্নয়ন হয়নি। সব দিক দিয়েই গ্রামটি অবহেলিত। মেলায় গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণ তেমন নেই। মহিলারাও অংশ নেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। যদিও বিজেপির অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। পার্টি অফিসে তালা দিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই দখল হল কার্যালয়! বিধায়ক বললেন, ‘‘পার্টি অফিস যদি দখল হয়ে থাকে, আগামী কালই তা পুনর্দখল করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy