ওল্ড দিঘাতে একাধিক ঘাটে শ্যাওলা জমেছে। আর নিউ দিঘায় ঘাটের ধারে থরে থরে সাজানো কালো পাথর। যার জেরে দুই এলাকার সৈকতেই স্নান করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন পর্যটকেরা। তাই গরমের ছুটিতে দিঘা বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের একাংশ স্নান করতে ভিড় জমাচ্ছেন নতুন এলাকায়।
৩০ এপ্রিল থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজে গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি সৈকত শহরে উদ্বোধন হয়েছে নতুন জগন্নাথ মন্দির। ফলে ছুটিতে সমুদ্র স্নান এবং মন্দির দর্শনের জোড়া টানে দিঘায় প্রচুর পর্যটকদের সমাগম ঘটেছে। শনিবার দুপুরে অধিকাংশ পর্যটক সমুদ্র স্নানে ভিড় জমান ওল্ড দিঘার নতুন জায়গায়। সি-হক ঘাটের পূর্ব দিকে মোহনাগামী রাস্তার ধারে কাতারে কাতারে পর্যটক নেমেছিলেন সমুদ্র স্নান করতে।
ছেলের নিয়ে কলকাতা থেকে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী স্নিগ্ধা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘নিউ দিঘার হোটেলে উঠেছিলাম। ছেলে সমুদ্র স্নান করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওখানে একটুও স্নান করার মতো পরিবেশ নেই। উঁচু-নীচু পাথর। বিপদ বুঝে স্থানীয়দের কাছে খোঁজ পেয়েই চলে এসেছে নতুন জায়গায়।’’ বারাসাতের অমিত বিশ্বাস, পুরীর কাঙ্গুনা সাহু, সিঁথির মোড়ের সমর বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘তথাকথিত ঘাট না হলেও নতুন জায়গার চারদিকে পুরীর সমুদ্র চরের মত বালি রয়েছে। ঢেউয়ের ধাক্কায় কেউ পাড়ে এসে আছাড় খেলেও সে রকম ভাবে আহত হবেন না।’’
ওল্ড দিঘায় সৈকতের একেবারে শুরুতে এই নতুন জায়গা পর্যটকদের কাছে সমুদ্র স্নানের জন্য ক্রমশ প্রিয় হয়ে উঠছে। তাই এই নতুন জায়গায় পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে নজরদারি চালাতে নুলিয়া এবং পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন যে জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্র স্নানের আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, ‘‘ওল্ড দিঘার একেবারে শুরুতে কিছুটা উন্মুক্ত বালির চর রয়েছে। সম্প্রতি ওখানে পর্যটকরা সমুদ্র স্নান করতে যাচ্ছেন। নজরদারি রয়েছে। তাঁদের যাতে ওঠানামায় অসুবিধে না হয়, তাই ওখানে কংক্রিটের ধাপ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’’
পুরনো ঘাটে শ্যাওলা জমছে বলেও পর্যটকেরা ওই ঘাট এড়াচ্ছেন বলে দাবি বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তপনকুমার মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘বহুবার দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাছে দাবি জানিয়েছি ঘাটগুলি নিয়মিত সংস্কার করার জন্য। শ্যাওলা জমে থাকায় পর্যটকদের সমস্যা হয়।’’ এ বিষয়ে পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঘাট গুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সেচ দফতরের। তারা বিষয়টি দেখছে। তবে জগন্নাথ মন্দির কেন্দ্র করে ওল্ড এবং নিউ দিঘায় দুটো নতুন ঘাট তৈরি করা হয়েছে। সেখানেও মানুষ স্নান করতে যাচ্ছেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)