ঠুঁটো পুলিশ। ফের পুলিশের নাকের ডগায় সোমবার রাতে খড়্গপুরে পুরাতনবাজার এলাকায় মন্দির ও পরপর তিনটি দোকানে চুরি করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। অথচ ঘটনাস্থলের অদূরেই পুলিশ পিকেট থাকলেও ঘটনার কিছু টেরই পেল না তাঁরা। এ দিন রাতেই দেবলপুরে একটি মনোহারি দোকানেও চুরির ঘটনা ঘটে। একের পর এক চুরির ঘটনা বাড়ায় ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে দেখা যায়, রেলশহরের পুরাতনবাজার এলাকায় শীতলা মন্দির সংলগ্ন বাজারে পরপর সাতটি দোকানের তালা ভাঙা। কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় খটিক বস্তির কাছে একটি প্রণামী বাক্স পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় শীতলা মন্দিরে থাকা দু’টি প্রণামী বাক্সের একটি উধাও। মন্দিরের দরজার তালাও ভাঙা। মন্দির পরিচালন কমিটির সদস্য বিশ্বরূপ হাতি বলেন, “মন্দিরের প্রণামী বাক্স প্রতি ছ’মাস অন্তর খোলা হয়। বাক্স খোলার মাসখানেক বাকি থাকতেই চুরির ঘটনা ঘটল। প্রতিদিন রাতে কাছের মোড়েই পুলিশ থাকে, কিন্তু চুরি হলেও তাঁরা টের পেল না। এটা কীভাবে সম্ভব?”
তাঁর অভিযোগ, “আমাদের মনে হচ্ছে পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে।” পুরাতন বাজারের সাতটি দোকানের তালা ভাঙা হলেও পরপর তিনটি দোকান থেকেই চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বই, একটি মনোহারি ও একটি সাইকেল দোকান। অন্য দিকে, এ দিন রাতেই শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দেবলপুর পুর-হাসপাতাল সংলগ্ন একটি বড় মনোহারি দোকানেও অ্যাসবেস্টস ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানের মালিক মহম্মদ নিসার বলেন, “আমি সোমবার রাত ন’টায় দোকান বন্ধ করি। তার পরেই এই ঘটনা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে শহরে না হয়, সেজন্য পুলিশকেও সজাগ হতে হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শীতলা মন্দির থেকে হাত দশেক দূরেই পুরাতনবাজার মোড়ে প্রতিদিন রাতে দু’তিন জন পুলিশকর্মী থাকেন। অথচ ওই মন্দিরে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটলেও তাঁরা টের পাননি। তবে শুধু চুরিই নয়, শহর জুড়ে মদ-জুয়ার আসরের রমরমাও বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য। গত ২৩ অক্টোবর ইন্দায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয়। ২০ অক্টোবর ৭ নম্বর রেল কলোনি এলাকায় ছিনতাই করতে এসে গুলি চালনার ঘটনাও ঘটে। এইভাবে একের পর এক চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়তে থাকলেও কিনারা হয়নি অধিকাংশ ঘটনারই। যদিও খড়্গপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা পুরাতনবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলর তুষার চৌধুরী বলেন, “এটা বুঝতে পারছি পুলিশ যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েই কাজ করছে। কিন্তু আগে যেভাবে পুলিশ সবসময় শহরের রাস্তায় টহল দিত, এখন সেটা দেখতে পাচ্ছি না।” যদিও পুলিশের দাবি, শহরে আগের মতোই নজরদারি চালানো হয়। এই ঘটনারও তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy