ওড়িশা থেকে বাংলায় কাজের সন্ধানে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পথ ভুলে হারিয়ে গিয়েছিলেন। এ দিক-সে দিক ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে গিয়েছিলেন নদিয়ায়। অবশেষে তাঁদের উদ্ধার করলেন স্থানীয়েরা। আদরযত্নও করলেন। শুধু তা-ই নয়, পরিযায়ী শ্রমিক এক মহিলার কোলে থাকা শিশুর জন্য দুধেরও ব্যবস্থা করা হল। পরে তাঁদের সকলকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করল পুলিশ।
সম্প্রতি কাজের সন্ধানে যাওয়া বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন রাজ্যে। সেই তালিকায় বিজেপিশাসিত ওড়িশাও রয়েছে। তা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও হয়েছে। সেই বিতর্কের আবহে নদিয়ার এই ঘটনা অন্য রকম বার্তা বহন করছে বলে মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাজের সন্ধানে এ রাজ্যে এসে পথ ভুলে নদিয়ার তেহট্ট থানার বেতাই থানা এলাকায় চলেছিলেন ওড়িশার কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে তিন জন পুরুষ, এক মহিলা ও এক শিশু ছিল। তাঁরা প্রথমে হাওড়ায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে যান শিয়ালদহ স্টেশনে। তার পর ট্রেনে পৌঁছে যান কৃষ্ণনগরে। সেখান থেকে ঘুরতে ঘুরতে বেতাই। এলাকায় তাঁদের অসহায় ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে স্থানীয়েরা বুঝতে পারে, ওই শ্রমিকেরা পথ ভুলে নদিয়ায় চলে এসেছেন। এর পর স্থানীয়েরাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও।
তেহট্টের এসডিপিও শুভতোষ সরকারের নির্দেশে ওড়িশার পরিযায়ী শ্রমিকদের তেহট্ট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানে তাঁদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখা হয়। দু’ঘণ্টা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন এসডিপিও। এর পরেই ওড়িশার ঠিকানায় যোগাযোগ করে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। পরিযায়ী শ্রমিকদের কিছু টাকাও দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছোতে পারেন।
শুভতোষ বলেন, ‘‘আমরা ওড়িশায় যোগাযোগ করে জেনেছি ওঁরা পরিযায়ী শ্রমিক। কাজের সন্ধানে এ রাজ্যে এসেছিলেন। ভুল করে এই এলাকায় চলে আসেন। ওঁদের উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের এক জন বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করেছে। তারা আমাদের বাড়ি পৌঁছোনোর সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এমনকি ভাড়াও দিয়ে দিয়েছে। আজ পুলিশের জন্য আমরা সুস্থ আছি।’’