Advertisement
E-Paper

দেওয়ালে সাঙ্কেতিক ভাষা, পাশে ঝুলছে দেহ, রাজ্যে মারণ গেমের বলি ছাত্র!

দেহ উদ্ধারের পর খামারের দেওয়ালে লাল এবং সবুজ কালিতে সাঙ্কেতিক ভাষায় কিছু লেখা দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসী এবং পুলিশের। দেহের পাশেই ছিল মণীশের মোবাইল। দেখা যায়, দেওয়ালে বেশ কিছু অবিন্যস্ত শব্দ লেখা। তার মধ্যে অন্যতম ইলুমিনাটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ১৮:৪৩
এরকমই সাঙ্কেতিক লেখা ছিল দেওয়ালে। পাশে মৃত ছাত্র। —নিজস্ব চিত্র

এরকমই সাঙ্কেতিক লেখা ছিল দেওয়ালে। পাশে মৃত ছাত্র। —নিজস্ব চিত্র

এ বার রাজ্যে নয়া মারণ গেমের বলি হল এক স্কুল পড়ুয়া। কার্শিয়াঙের সেন্ট মেরি এলাকার ছাত্র মণীশ সার্কির (১৮) ঝুলন্ত মতদেহ উদ্ধার হয় একটি শুয়োরের খামারে। ওই খামারের দেওয়ালে লাল ও সবুজ কালিতে সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা দেখেই পরিবার ও এলাকাবাসীর সন্দেহ ব্লু হোয়েলের মতোই কোনও গেমের শিকার ওই ছাত্র। যদিও পুলিশ এখনই নিশ্চিত করে সেকথা বলতে চাইছে না।

অন্য দিনের মতোই সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল কার্শিয়াঙের সেন্ট মেরি’জ হিল স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মণীশ। কিন্তু রাত ন’টা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি শুয়োরের খামারে উদ্ধার হয় মণীশের ঝুলন্ত দেহ।

গত দু’দিনের তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, খামারের দেওয়ালে স্প্রে পেন্ট করে বিভিন্ন ধরনের শব্দ লেখা রয়েছে। আঁকা রয়েছে কিছু ছবিও। সেগুলো খতিয়ে দেখে তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, মোমো ভিডিয়ো গেমের সঙ্কেত চিহ্ন হিসেবে একটি ঝুলন্ত দেহের ছবি থাকে, খামারের দেওয়ালে তেমন ছবিও মিলেছে। দেওয়ালে লেখা একটি শব্দ থেকে আরও একটি বিদেশি সংগঠনের কথা জানা গিয়েছে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যাদের সদস্য হওয়া যায়। এই সংগঠনটি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু ছাত্রটির সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক ছিল কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। মণীশের মোবাইলটির পাসওয়ার্ড ডিকোড করে খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, ‘‘আমরা ময়না-তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি। প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। তবে অনলাইন ভিডিয়ো গেম বা অন্য কোনও বিষয় কি না, পরিষ্কার হয়নি। ঘটনাস্থলের দেওয়ালে কিছু সাঙ্কেতিক চিহ্ন মিলেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

কিন্তু দেহ উদ্ধারের পর খামারের দেওয়ালে লাল এবং সবুজ কালিতে সাঙ্কেতিক ভাষায় কিছু লেখা দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসী এবং পুলিশের। দেহের পাশেই ছিল মণীশের মোবাইল। দেখা যায়, দেওয়ালে বেশ কিছু অবিন্যস্ত শব্দ লেখা। তার মধ্যে অন্যতম ইলুমিনাটি। লাল এবং সবুজ কালি দিয়ে আঁকা হয়েছে সঙ্কেত বা ছকের মতো কিছু। সবচেয়ে আশ্চর্যের, দেওয়ালে একটি ছবি যে ভাবে আঁকা ছিল, মণীশের দেহ হুবহু সেভাবেই ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে। এ সব দেখেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, ব্লু হোয়েলের মতো কোনও মারণ গেমের শিকার মণীশ।

আরও পডু়ন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁদ, সহবাসের পর ভিডিয়ো করে ব্ল্যাকমেল, নির্যাতন সোনারপুরে

মণীশের বাবা সন্তোষ সার্কি ছোট শুয়োর বেচাকেনা করেন। মা চন্দ্রমায়া সার্কি জানান, ‘‘ছেলে সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে থাকত। কিন্তু গেম খেলত কি না, জানি না। পড়াশোনায় তো ভালই ছিল। অস্বাভাবিক কিছু বাড়িতে পাইনি।’’ স্থানীয়দের পাশাপাশি জিটিএ সহ-সভাপতি অনিত থাপা দাবি করেছেন, মণীশ কোনও অনলাইন গেমের শিকার হতে পারে। যদিও পুলিশ সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখতে চাইছে। দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হরিকৃষ্ণ পাই বলেন, ‘‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। মণীশ এর মোবাইলে পাসওয়ার্ড থাকায় খোলা যায়নি। ময়না তদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে ওই খামারে মণীশ এর সঙ্গে কারা যাতায়াত করত, সে সব বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ের সব স্কুলে সচেতনতা শিবির করা হবে।’’

আরও পড়ুন: নিঝুম রাতে ফের উৎকট আওয়াজ, ইঁদুর না কি ভূত, ধন্দ গেল না রায়গঞ্জে

এই সাঙ্কেতিক ভাষার মধ্যে ‘ইলুমিনাটি’ শব্দটির একটি অর্থ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। জার্মানির বারাভিয়াতে অষ্টাদশ শতকে এই নামে একটি গুপ্ত সঙ্ঘ ছিলো। ওই সঙ্ঘ গোপনে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মবিশ্বাস দৃঢ় করতে প্রচার চালাত। এর মাধ্যমেই সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যাবে বলে মনে করতেন সঙ্ঘের সদস্যরা। সেই ভাবনা থেকেই কোনও মারণ গেম তৈরি হতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।

Kurseong Blue Whale Online Suicide Game মোমো চ্যালেঞ্জ Momo Challenge Blue Whale Game Momo Game
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy