মুকুল রায় ও দীনেশ ত্রিবেদী। ফাইল চিত্র।
দিল্লির তৃণমূলের সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে আঁচ দেওয়া হয়েছিল বুধবারই দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া আসনে রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হবে। দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরের জল্পনায় ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতা যশবন্ত সিনহার নাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিক সূত্রের গুঞ্জন, তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রার্থী পদে বিবেচনার মধ্যে রয়েছে মুকুল রায়ের নামও।
সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিধানসভার স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেছেন মুকুল। জল্পনা চলছে কেন এই সাক্ষাৎকার? তাঁকে রাজ্যসভার প্রার্থী হতে গেলে প্রথমেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। তা হলে কি সেই বিষয়টি নিয়েই আলোচনার জন্য স্পিকারের কাছে মুকুল?
সূত্রের মতে, একাধিক কারণে মুকুলের নামটি আলোচনার বৃত্তে উঠে আসছে। প্রথমত, এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, বিজেপি যে ভাবে চাপ বাড়াচ্ছে, তাতে আগামী টানা পাঁচ বছর দলত্যাগ বিরোধী আইনের আঁচ পড়তে না দিয়ে বিধায়ক পদে তাঁকে রেখে দেওয়া আইনত অসম্ভব। বিজেপি সূত্রের খবর, মুকুলের সদস্যপদ যাতে খারিজ হয়, তার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। ফলে মুকুলকে যদি পদত্যাগ করিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে, শুধু মুকুল তথা তৃণমূলের উপর থেকেই চাপ কমবে না, উল্টো দিকে লোকসভায় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শিশির অধিকারী ও সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের জন্যও প্রভূত চাপ দেওয়া সম্ভব হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বারবার লোকসভার স্পিকারের কাছে এই নিয়ে তৃণমূল দরবার করার পর হঠাৎই লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে শিশির ও সুনীলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে মনে করছেন, এটাও বিজেপি-র পাল্টা চাপের খেলা। মুকুল রায়ের দলত্যাগ-বিরোধী আইন ভঙ্গের কারণে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে যখন রাজ্য বিজেপি চাপ বাড়াচ্ছে, তখন কেন্দ্রীয় স্তরে সেই একই আইনের প্রয়োগ দেখিয়ে অর্থাৎ শিশির, সুনীলকে চিঠি পাঠিয়ে সেই চাপকে আরও পোক্ত করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
তৃণমূল শিবিরের গুঞ্জন, রাজ্যসভায় মুকুল রায়কে আনলে তাঁর একটা পুনর্বাসনও হবে। তিনি দিল্লি থেকে তৃণমূলের সংসদীয় রাজনীতিতে অংশ নেবেন। বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূলের সংগঠন তৈরি করার কাজটিও দেখতে পারবেন। এমনিতেও দলত্যাগ-বিরোধী আইনের জেরে তাঁকে বেশি দিন রাখা না গেলে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরে পুর্ননির্বাচন হতই। যে হেতু তিনি খাতায় কলমে এখনও বিজেপিরই বিধায়ক, ফলে তিনি পদত্যাগ করলে বিজেপিরই একজন বিধায়ক কমবে। সংখ্যার দিক থেকে তৃণমূলের লোকসানের কোনও কারণ নেই। বরং রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরাট জয়ের পর এখন রাজ্যে যা হাওয়া তাতে, কৃষ্ণনগরে ফের ভোট হলে এ বার তৃণমূল প্রার্থীর জিতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy