Advertisement
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Explosive Recovered

বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার

২০১৮ সালে এই দেবীপুরেই ক্রেতা সেজে গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীদের মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে একেবারে অপহরণের কায়দায় সুতির তিন বিস্ফোরক কারবারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ১০:৩২
Share: Save:

বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার হল সুতির অরঙ্গাবাদ থেকে। জগতাই পঞ্চায়েতের দেবীপুর গ্রামে এক বাড়িতে হানা দিয়ে একটি ঘরের মধ্যে থেকে রাজ্য এসটিএফ সুতি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে শুক্রবার সন্ধ্যায়। বাড়ির উঠোনে টোটো গাড়ির সিটের তলাতেও রাখা ছিল আরও কিছু বিস্ফোরক। গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ির মালিক আকবর বিশ্বাসকে।

পুলিশের দাবি, টোটো গাড়ির সিটের তলায় লুকিয়ে চলত বিস্ফোরক দ্রব্য পাচার। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের পরিমাণ প্রায় ৪০ কিলোগ্রাম। সেই সঙ্গে মিলেছে চারকোল, সালফারও। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক কমলা ও সাদা রঙের। শুক্রবার রাতেই সুতি থানায় এফআইআর দায়ের করেছে এসটিএফ। পুলিশের সন্দেহ, আরও বিস্ফোরক লুকোনো রয়েছে আকবরের হেফাজতে।

২০১৮ সালে এই দেবীপুরেই ক্রেতা সেজে গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীদের মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে একেবারে অপহরণের কায়দায় সুতির তিন বিস্ফোরক কারবারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৮১ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক আটক করা হয়। আটক করা হয় একটি নম্বরহীন টাটা সুমো গাড়িও। সুতির সেই বিস্ফোরক উদ্ধার কাণ্ডের তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ এক সপ্তাহের মধ্যেই কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডের এক গুদাম থেকে ১১০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ও একটি ড্রামে ৩০ কিলোগ্রাম অ্যালুমিনিয়াম পেস্ট আটক করে।

শনিবার পুলিশ জানায়, এলাকায় বোমা বানানোর কাজে লাগানোর জন্যই এই বিস্ফোরক আনা হয়েছিল ঝাড়খণ্ড থেকে। সেই সূত্রেই এসটিএফের কাছে গোপন খবর আসে জগতাই পঞ্চায়েতের দেবীপুরে আকবরের বাড়িতে বিস্ফোরক লুকোনো রয়েছে। নির্দিষ্ট খবর পেয়েই তারা হানা দেয় শুক্রবার সন্ধেতেই। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সুতি, শমসেরগঞ্জ সহ আশপাশের এলাকায় যারা বোমা বানায় তাদের কাছে নিয়মিত ভাবে বিস্ফোরক সরবরাহ করত আকবর সহ তার ৬-৭ জন সঙ্গী। বাড়িতে রাখা টোটোর সিটের তলায় প্যাকেট বন্দি করে নিয়ে গোপনে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো সেই সব বিস্ফোরক। যেহেতু এলাকায় মাঝে মধ্যে টোটোও চালাতো আকবর তাই পুলিশের সন্দেহ এড়াতে এই কায়দা নিয়েছিল সে।

বিস্ফোরকের ও বোমার কারবারের জন্য সুতির অরঙ্গাবাদের কিছু এলাকার পরিচিতি রয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর বোমা বিস্ফোরণ হামলায় তিন জনকে এনআইএ ও সিআইডি গ্রেফতার করেছে।তারা এখনও এনআইএ-র হেফাজতে। সকলেরই বাড়ি সুতির দেবীপুর গ্রামের আশপাশেই।

২০১৫ সালের ৬ মে রাতের পিংলার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত ১৩ জনের মধ্যে ১০ জনই সুতি এলাকার বাসিন্দা। ৩ জন ছাড়া সকলেরই বয়স ১১ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। সকলেই দেবীপুর লাগোয়ার নতুন চাঁদরার বাসিন্দা।

দীর্ঘ দিন ধরে অরঙ্গাবাদ লাগোয়া এই এলাকার কয়েকটি গ্রাম বাজি তৈরির জন্য পরিচিত ছিল। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কিশোর, কিশোরীরাও এক সময় হাত লাগাত বাজি তৈরিতে। ফলে সকলেই জানে বাজি তৈরির কাজ। এখন বাজি নেই, তার বদলে বোমা বানানো হচ্ছে। এই এলাকার পাশ দিয়ে গেছে গঙ্গা। তার পরে চর পেরোলেই বাংলাদেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jangipur Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE