Advertisement
E-Paper

কালীগঞ্জের তমন্না খুনের ৮৪ দিনের মাথায় ৩৪০ পাতার চার্জশিট জমা আদালতে, মাত্র ১০ জনের নাম? প্রশ্ন মায়ের

কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের ভোটগণনা ছিল ২৩ জুন। সে দিন ফল পুরোপুরি ঘোষিত হওয়ার আগেই তৃণমূলের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। বিজয়মিছিল বার করা হয়। অভিযোগ, সেখান থেকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। তাতে মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৪
Tamanna Kahtun Murder Case

(বাঁ দিকে) তমন্না খাতুন। কন্যাহারা মায়ের কান্না। সামলাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

নদিয়ার কালীগঞ্জে তমন্না খাতুন খুনের মামলায় অবশেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। শনিবার ঘটনার ৮৪ দিনের মাথায় দেওয়া ওই চার্জশিটে মোট ১০ জনের নাম অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র বেশ কিছু ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পরবর্তী সময়ে বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়া হবে। অন্য দিকে, মৃতার মায়ের দাবি, অভিযুক্তদের ‘বেশির ভাগ’ এখনও অধরা। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন কন্যাহারা সাবিনা বিবি।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার কৃষ্ণনগর আদালতে মোট ৩৪০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে তারা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ , ১৯০ (১) ও (২), ১৮৩, ১০৯, ৩০৫ ধারা এবং বিস্ফোরক আইনের ৩৪ নম্বর ধারা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। খুনের অপরাধে শাস্তির নিদান দেওয়া রয়েছে এই ধারায়। বলা হয়েছে, খুনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে দোষীদের। এ ছাড়াও, ১০৯ (১) ধারা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে পুলিশ। ওই ধারা অনুযায়ী, কাউকে খুনের চেষ্টা করলে এবং সেই চেষ্টায় কারও মৃত্যু ঘটলে অপরাধীর ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

গত ১৯ জুন কালীগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচন ছিল। ২৩ তারিখ ছিল ভোটগণনা। সে দিন ফল পুরোপুরি ঘোষিত হওয়ার আগেই কালীগঞ্জে শাসকদল তৃণমূলের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিজয়মিছিল বার করা হয়। অভিযোগ, সেখান থেকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছিল। যে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমন্নার।

মেয়েটির পরিবার সিপিএম সমর্থক হিসাবে পরিচিত। গাওয়াল শেখকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন তমন্নার মা। পরে গাওয়াল এবং তাঁর পুত্র বিমল শেখ, দু’জনেই গ্রেফতার হন। পরিবারের তরফে মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তবে গ্রেফতার হয়েছেন ১০ জন। গাওয়াল, আনোয়ার শেখ, আদার শেখ, মনোয়ার শেখ, কালু শেখ, শরিফুল শেখ,আবুল শেখ, কাশেম শেখ, নবাব শেখ এবং হাবিবুল শেখের নাম উল্লেখ করা হয়েছে পুলিশের চার্জশিটে।

চার্জশিট দিতে দেরি হচ্ছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিল তমন্নার পরিবার। শনিবার যখন তা আদালতে জমা পড়ল, তখন মৃতার মা বলেন, ‘‘আমি অবাক!’’ কেন? মহিলার দাবি, ‘‘২৪ জনের নামে মামলা হল। অথচ চার্জশিট হল ১০ জনের নামে! বাকিদের কি ছেড়ে দেওয়া হবে? তারা সবাই চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। আবার চার্জশিটেও তো নাম রাখল না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব। পুলিশের ভূমিকায় একদম আশ্বস্ত হতে পারছি না।’’ অন্য দিকে, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, ‘‘আপাতত ১০ জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টরি (অতিরিক্ত) চার্জশিট দেওয়া হবে। প্রত্যেক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা আমাদের লক্ষ্য।’’

chargesheet filed Krishnanagar West Bengal Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy