Advertisement
E-Paper

ঘরছাড়া রুখতে গ্রামে আপেল চাষের ভাবনা

কাশ্মীরের আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়ে সাগরদিঘির বাহালনগরের পাঁচ জন শ্রমিকের জঙ্গিহানায় মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতেই প্রশাসনের এই উদ্যোগ।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
পঞ্চায়েত কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র

শ্রমিকদের কাশ্মীরে যাওয়া রুখতে সাগরদিঘির মাটিতে এ বার আপেল বাগান তৈরির চিন্তা-ভাবনা শুরু করল প্রশাসন। শুক্রবার ব্লক অফিসে এ নিয়ে বোখারা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ অন্য পঞ্চায়েত কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু।

কাশ্মীরের আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়ে সাগরদিঘির বাহালনগরের পাঁচ জন শ্রমিকের জঙ্গিহানায় মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতেই প্রশাসনের এই উদ্যোগ। বিডিও জানান, ওই গ্রাম থেকে অন্তত আড়াইশো শ্রমিক কাশ্মীরে আপেলের বাগানে কাজে যান। অনেকে দীর্ঘ দিন বাগানের পরিচর্যার কাজও করেন। তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই সাগরদিঘিতে আপেল বাগান তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। তার জন্য জমিও দেখতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েতকে। এলাকার অন্তত পাঁচ-ছ’টি এলাকায় আপেল বাগান তৈরি করা যেতে পারে।

বিডিও প্রাথমিক ভাবে খড়্গপুরের আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। জমি বাছাইয়ের কাজ শেষ হলেই তাঁদের সাগরদিঘিতে এনে যাবতীয় পরামর্শ নেওয়া হবে বলে বিডিও-র দাবি।

বোখারা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রাবণী দাস জানান, বিডিও-র সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক হয়েছে। বাহালনগরের শ্রমিকদের কাশ্মীর যাওয়া আটকাতেই তাঁদের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। সেই জন্য জমি দেখার কাজও শুরু হয়েছে।

বাহালনগরের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কশিমুদ্দিন শেখ বলছেন, “বাঁকুড়ায় আপেল চাষের চেষ্টা সফল হয়েছে বলে বিডিও জানালেন। বাঁকুড়ায় যদি আপেল চাষ হতে পারে, তা হলে সাগরদিঘিতে হতে বাধা কোথায়?”

বাহালনগরের আপেল বাগানে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কাজ করছেন ফুলবাড়ির সাবির শেখ। তিনি বলছেন, “সাগরদিঘিতে কাজের অভাব নেই। যেটা নেই সেটা হল কাশ্মীরের মতো মজুরি। এখানে কোন কাজে কাশ্মীরের মতো মজুরি দেবে, বলুন তো? সেই মজুরি না দিলে শ্রমিকদের কাশ্মীর যাওয়া আটকানো অসম্ভব। এখন আতঙ্কের পরিবেশ বলে কিছু দিন হয়তো শ্রমিকেরা যাবেন না। কিন্তু পরে যখন আয়ের পথ পাবেন না তখন ফের কাশ্মীরমুখী হবেন শ্রমিকেরা। তাই সাগরদিঘিতে সেই আয়ের উপযুক্ত ব্যবস্থা দরকার।”

কিন্তু সাগরদিঘির মতো জায়গায় আপেল চাষ কি সম্ভব হবে?

প্রশ্নটা শুনে ভুরু কুঁচকোচ্ছেন কৃষি দফতরের কর্তারা। জঙ্গিপুরের মহকুমা কৃষি অধিকর্তা উত্তম কোনাই বলছেন, “সব চাষেরই একটা নির্দিষ্ট পরিবেশ ও আবহাওয়া রয়েছে। সাগরদিঘির মতো জায়গায় আপেল চাষ সেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খায় না। চাষ করা যেতেই পারে। কিন্তু তা বাজারে বিক্রি করতে হবে তো! আপেলের স্বাদ, মিষ্টতা যদি না থাকে তা হলে সে আপেল ক্রেতারা কিনবেন কেন?” ফলে আপেল চাষের ব্যাপারে প্রশাসন উৎসাহী হলেও কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Kashmir Sagardighi Apple Farming Death Labour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy