কৃষ্ণনগরে বিজেপির মিছিল। নিজস্ব
সবে বক্তব্য রাখতে উঠেছেন দিলীপ ঘোষ। মঞ্চের সামনে রাস্তায় বসে কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক। মঞ্চের ডান দিক থেকে হুটার বাজিয়ে হাজির একটি অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু কোনও ভাবেই সেটিকে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা করে দিলেন না বিজেপি কর্মীরা। উল্টে দিলীপ সেটিকে দেখে বললেন, ‘‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। লোকে রাস্তায় বসে রয়েছে। ডিসটার্ব হয়ে যাবে। ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে নিয়ে যান।’’
বেগতিক দেখে পিছন ফিরে ঘুরপথেই রওনা দিল সেই অ্যাম্বুল্যান্স। আর সে দিকে তাকিয়ে দিলীপ মাইকে কর্মীদের উদ্দেশে দাবি করলেন, এটা আসলে তাঁর সভা বানচাল করার চক্রান্ত। সভাস্থলে উপস্থিত অনেকেই অবশ্য এই ঘটনা দেখে অবাক। তবে বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পালের দাবি, “ওই অ্যাম্বুল্যান্সটা ফাঁকা ছিল। তাতে কোনও রোগী ছিল না। তাই অন্য পথে যেতে বলা হয়েছে। রোগী থাকলে আমরাই ভিড় সরিয়ে সেটিকে এগিয়ে দিতাম।”
নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে সোমবার রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে কৃষ্ণনগরে মিছিল করে বিজেপি। রাজবাড়ি থেকে মিছিল যায় জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সেখানে সভা করেন দিলীপ। মিছিলে এবং সভায় ভালই জমায়েত হয়েছিল। যা দেখে ইতিমধ্যে বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, রানাঘাটের পরে কৃষ্ণনগরেও গেরুয়া পতাকা উড়তে শুরু করেছে। বিশেষত, সামনে যেখানে কৃষ্ণনগর পুরভোট।
কিন্ত প্রশ্ন হল, এই জমায়েতে কৃষ্ণনগর শহরের বাসিন্দা কত জন? মিছিলের বেশির ভাগই মুখ গ্রামাঞ্চল থেকে আসা মানুষের, যাঁদের ভিতরে বেশির ভাগ মতুয়া সম্প্রদায়ের। আর কিছুদিন পরে যেখানে তৃণমূলের হাত থেকে কৃষ্ণনগর পুরসভা ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াই বিজেপির, সেখানে মিছিলে সে ভাবে কেন শহরের বাসিন্দাদের দেখা গেল না? কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান, তৃণমূলের অসীম সাহার দাবি, “কোথায় লোক? এত ছন্নছাড়া মিছিল আগে কোনও দিন দেখিনি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বেশির ভাগ লোক এসেছেন পাশের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা-বনগাঁ থেকে। কৃষ্ণনগর শহর থেকে খুব বেশি বলে ৫০টা লোক ছিল।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল পাল্টা দাবি করেন, “শুধু কৃষ্ণগর শহরের প্রায় দু’হাজার লোক ছিল মিছিলে। আর শুধু উত্তরের লোক মিছিলে এসেছিল। গোটা জেলা হলে শহরে জায়গা হত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy