E-Paper

৫৭ লক্ষ টাকা তছরুপে গ্রেফতার কর্মী 

পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে খবর, ২০১৯ সাল থেকে ওই কর্মী ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে জমা না দিয়ে সরিয়ে রাখছিলেন বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দফতরের কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম বাবলি সরকার। তিনি কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের করণিক পদে কর্মরত। দফতরের ব্লক আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে খবর, ২০১৯ সাল থেকে ওই কর্মী ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে জমা না দিয়ে সরিয়ে রাখছিলেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ব্লক আধিকারিক তুহিন বিশ্বাসের সন্দেহ হওয়ার তিনি তদন্ত শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে তছরুপের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তিনি কৃষ্ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সোমবার রাতে ওই মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫৭ লক্ষের বেশি টাকা তছরুপের প্রমাণ মিলেছে। তার বাইরে আরও টাকা তছরুপ করা হয়েছে কি না তা জানার জন্য ‘স্পেশাল অডিট’ করার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই কর্মীকে বরখাস্তের পাশাপশি অন্যান্য বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রশাসন সূূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই মহিলা ‘আপার ডিভিশন ক্লার্ক’ হিসাবে কর্মরত। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের মাটি বিক্রি সংক্রান্ত ট্যাক্স বাবদ যে টাকা আদায় হত, সেই টাকা চালান কেটে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ওই কর্মীর। অভিযোগ, তিনি টাকা ও চালান নিয়ে নিয়মিত ব্যাঙ্কে যেতেন। টাকা জমা পড়লে তা সংশ্লিষ্ট দফতরের একটি নির্দিষ্ট পোর্টালে তুলে দেওয়া হত। ২৯ মার্চও ওই মহিলা চারটি চালানে টাকা জমা দিতে গিয়েছিলেন। তবে নানা কারণে ব্লক আধিকারিক তুহিন বিশ্বাসের সন্দেহ হয়। তিনি পয়লা মার্চ অন্যান্য কর্মীদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কৃষ্ণনগর শাখায় গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে চালানে টাকা জমা দেওয়ার বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানতে চান। ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয় যে ওই মহিলা কর্মী দু’টি চালানে টাকা জমা দিয়েছেন। যদিও তাঁকে চারটি চালানের টাকা জমা দিতে পাঠানো হয়েছিল। তিনি অবশ্য চারটি চালানের উপরেই ব্যাঙ্কের স্ট্যাম্প মারা ‘রিসিপ্ট’ জমা দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষের কাছে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, চালান খতিয়ে দেখা যায়, রিসিপ্টে গোল স্ট্যাম্প মারা হয়েছে। অথচ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ক্ষেত্রে তাঁরা চৌকো স্ট্যাম্প ব্যবহার করে থাকেন। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার পর প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। দেখা যায় ২০১৯ সাল থেকে মোট ৫৭ লক্ষ ১৮ হাজার ৩০ হাজার টাকা তিনি ব্যাঙ্কে জমা দেননি। তার পর দফতর ও পুলিশ মিলে ব্যাঙ্কে এসে সব তথ্য ও নথি সংগ্রহ করে। প্রাথমিক ভাবে তছরুপ প্রমাণিত হওয়ার পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই কর্মীকে বরখাস্তের পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগীয় পদক্ষেপও করা হবে।” আর লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার তপু দত্ত বলেন, “গোটা বিষয়টি ব্যাঙ্কের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন। আমাদের কোনও কর্মীর যোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধেও সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnanagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy