E-Paper

গণধর্ষণের পর হামলায় ধৃত, অধরা তিন জন

গত রবিবার বাড়ির লোকজন বাউল মেলায় চলে গেলে কিশো‌রীর এক কাকিমার বাড়িতে মদের আসর বসায় দুই কলেজ পড়ুয়া ও এক স্কুলছাত্র। কিশোরী সেখানে গেলও তাকেও মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৩
করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে অবরোধ। তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র

করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে অবরোধ। তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র sagarhaldar741160@gmail.com

কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলায় মূল তিন অভিযুক্তের পাশাপাশি আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্যাতিতার পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় চতুর্থ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মঙ্গলবার তেহট্ট আদালতে হাজির করা হলে ধর্ষণে অভিযুক্ত তিন জনকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। মারধরে অভিযুক্ত চতুর্থ জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া নির্যাতিতা ছাত্রীটি এখনও কৃষ্ণনগরে নদিয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ দিন যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে ধর্ষণে অভিযুক্ত দশম শ্রেণির ছাত্রের কাকা। তবে এফআইআরে তার নাম ছিল না। হামলার অভিযোগে নাম থাকা তিন জন এখনও অধরা। তার মধ্যে এক জন কলকাতা পুলিশের কর্মী।

এ দিন সকালে বিজেপির নেতৃত্বে গ্রামের বেশ কিছু মহিলা হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করেন। নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যেরা ছাড়াও বিজেপি কর্মীরাও মিছিলে ছিলেন। খানিক পরে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। বিজেপির মহিলা প্রধান দাবি করেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্ত্বেও এখানে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। শাসক দলের কর্মীরাই এ সব কাজে যুক্ত থাকছে। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীকেই বা কেন গ্রেফতার করা হবে না?”

সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে বলে পুলিশ প্রতিশ্রুতির দিলে প্রায় চল্লিশ মিনিট পর অবরোধ ওঠে। কাছেই তৃণমূলের দফতরে ছিলেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। তিনি পাল্টা বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। বিজেপি আসলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।” কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ বলেন, “এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কেউ রেহাই পাবে না। সবাইকে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে বিজেপির উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস দাবি করেন, “অভিযুক্তদের পরিবার তৃণমূল সমর্থক। নির্যাতনের পর তারা নির্যাতিতার পরিবারের উপর হামলা চালায়। শাসক দলের হাত তাদের মাথায় আছে বলেই তারা গ্রেফতার হয়নি।” বিকেলে আবার সিপিএমের নেতৃত্বে মহিলারা গ্রামে মিছিল করেন। পথসভা করে অবৈধ মদের দোকান ও মাদকের কারবার বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়।

গত রবিবার বাড়ির লোকজন বাউল মেলায় চলে গেলে কিশো‌রীর এক কাকিমার বাড়িতে মদের আসর বসায় দুই কলেজ পড়ুয়া ও এক স্কুলছাত্র। কিশোরী সেখানে গেলও তাকেও মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। তিন জনই গ্রেফতার হয়েছে। এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তারা দাবি করে, সচেতন ভাবে তারা এই ঘটনা ঘটায়নি। দুই যুবক দাবি করে, তারা কিশোরীর কাকিমার পরিবারের পূর্ব-পরিচিত এবং বাড়ির লোকই তাদের মদ খাওয়ার জায়গা করে দিয়েছিল। পরে কিশোরীটি এসে নিজেই মদ খেতে চায়। তার কাকিমা আগের দিনই জানিয়েছিলেন, কাউকে বাড়িতে ঢোকার অনুমতি তাঁরা দেননি। তাঁদের অনুপস্থিতির সুযোগে ছেলেগুলি বাড়িতে ঢুকেছিল। এ দিন তিনি বলেন, “দোষ করে বাঁচার জন্য এখন ওরা এ সব বলছে। ওদের সমস্ত কথাই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy