জনসভায় বাবুল সুপ্রিয়। শুক্রবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ
‘মহাগুরু’র জনসভার পাল্টা দিতে গিয়ে কার্যত ‘ফ্লপ’ হল গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে তৃণমূলের সভা। তিন দিন আগে যেখানে বিজেপির সভায় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে দেখতে বাঁধভাঙা ভিড় হয়েছিল, শুক্রবার বাবুলের কিন্তু মোটেই জমল না।
বগুলার এই পাল্টা সভা নিয়ে এখন তৃণমূলের ভিতরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, মিঠুনের মতো এক জন প্রাক্তন সুপারস্টারের মোকাবিলা কেন এত তড়িঘড়ি করতে যাওয়া হল? কেন আরও বড় কোনও তারকাকে নিয়ে এসে গুছিয়ে সভা করা হল না? বিশেষ করে হাঁসখালি বা কৃষ্ণগঞ্জের মত উদ্বাস্তু ও মতুয়া-প্রধান এলাকায় যেখানে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূল কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে? প্রস্তুতি ছাড়া ‘তারকার যুদ্ধে’ নামতে গিয়ে কেন দলের মুখ পোড়ানো হল? গত মঙ্গলবার বগুলার আইটিআই কলেজের মাঠে মিঠুন ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সভায় মাঠ আর রাস্তা মিলিয়ে অন্তত বিশ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি। এর পরেই সরস্বতী পুজোর পর দিন পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। স্থানীয় স্তরে তা নিয়ে মৃদু আপত্তিও উঠেছিল। একে তো সরস্বতী পুজোর রেশ, তার উপর ২৭ জানুয়ারি বিয়ের তারিখ থাকায় এই সভা দু’দিন পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন কেউ-কেউ।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ রাজ্য থেকে নির্দেশ আসে যে শুক্রবার সভা করতে আসবেন গায়ক তথা বনমন্ত্রী বাবুল। এই দিনই জেলায় তাঁর আরও দু’টি কর্মসূচি ছিল। বগুলা হাইস্কুল মাঠে তাঁর সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নদিয়া দক্ষিণ থেকে যত বেশি সম্ভব লোক জড়ো করার তোড়জোড় চলতে থাকে।
এ দিন বাবুল সভামঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পরে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মাঠের দিকে আসতে দেখা যায়। ওই মাঠে খুব বেশি হলে হাজার পাঁচেক লোক ধরে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। তারও অনেকটাই ফাঁকা পড়ে। বাইরে রাস্তায় কিছু লোক ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে চার হাজারের বেশি লোক হয়নি।
প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ বাবুল বলেন, “গত ভোটে বিজেপি নানা ভাবে ভুল বুঝিয়েছিল। মানুষ আমায় ভুল বুঝে থাকতে পারে। জীবনে আর দলবদল করব না।” মিঠুন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “উনি নমস্য অভিনেতা। বাংলার গর্ব, ভারতের গর্ব। কিন্তু হঠাৎ বিজেপির চিত্রনাট্য ওঁর এত পছন্দ হল কী করে? ওরা তো দেশকে নানা ভাবে বিভক্ত করে দেবে। বাঙালিদের ভাগ করছে। দেশকে বিভক্ত করছে।”
প্রায় কোনও রকম প্রচার ছাড়াই এই সভা করা কি হঠকারিতা হয়ে গেল না? তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “জেলাস্তর থেকে সিন্ধন্ত নেওয়া হয়েছে, সর্বত্র বিজেপির সভার ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে পাল্টা সভা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy