Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

ধান কেনায় ফড়েরাজ রুখতে মরিয়া প্রশাসন

বরাবরই সহায়ক মূ্ল্যে ধান কেনা নিয়ে ফড়েরাজের অভিযোগ ওঠে। প্রকৃত কৃষকের পরিবর্তে ফড়েদের ধান সহায়ক মূল্যে কেনার অভিযোগ ওঠে। গত বছরও শক্তিপুরে ধান কেনা নিয়ে একটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৩
Share: Save:

আজ, বৃহস্পতিবার থেকে মুর্শিদাবাদে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হবে। জেলার ২৫টি ‘কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে’ কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হবে। পরে গ্রামে গ্রামে শিবির করেও ধান কেনার কাজ শুরু হবে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘নভেম্বরের ৫ তারিখ থেকে কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে। তবে সময় মতো মাঠ থেকে ধান না ওঠার কারণে এত দিন ধান কেনা শুরু করা যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে ধান কেনা শুরু হবে।’’

বরাবরই সহায়ক মূ্ল্যে ধান কেনা নিয়ে ফড়েরাজের অভিযোগ ওঠে। প্রকৃত কৃষকের পরিবর্তে ফড়েদের ধান সহায়ক মূল্যে কেনার অভিযোগ ওঠে। গত বছরও শক্তিপুরে ধান কেনা নিয়ে একটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সে বিষয়ে খাদ্য দফতর তদন্ত শুরু করেছে। ধান কেনার কাজে এ বারে সেই সমবায় সমিতিকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়ে ফাঁক-ফোকর রাখতে চাইছে না জেলা প্রশাসনও। কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে দালালরাজ রুখতে পুলিশি নজরদারি চালানো হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ধান কেন্দ্রে পুলিশ নজরদারি চালাবে। পুলিশ আধিকারিক সে সব কেন্দ্র ঘুরে দেখবে।’’

জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠক বলছেন, ‘‘কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন। গত বছর বাস্তবে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৩২২ জন কৃষকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৩ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে জেলার ২৫টি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ৩৪ হাজার ৪৯৮ জন কৃষকের কাছ থেকে ৭১ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছিল। তবে এ বারে রাজ্য থেকে এখনও ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আসেনি।

জেলার ২৬ টি ব্লকে ২৫টি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ২২ টি কিসান বাজারে ও বাকি তিনটি ব্লকে কিসান বাজার না থাকায় অন্যত্র ধান ক্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র ছাড়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি, রাজ্য সরকারের আওতাধীন বেশ কিছু সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী গ্রামে গ্রামে শিবির করে ধান কিনবে। ১৫ অক্টোবর থেকে ধান বিক্রির জন্য কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে কৃষকদের নাম নথিভুক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪১২ জন কৃষক ধান বিক্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন।

জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে জেলার দু’লক্ষ ৬৮ হাজার কৃষকের তথ্য রয়েছে। কৃষি দফতর থেকে তা সংগ্রহ করেছে খাদ্য দফতর। যাঁরা কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় আছেন তাঁদের নাম নথিভুক্তিকরণের জন্য ওই প্রকল্পের আবেদনের সময় দেওয়া কৃষি দফতরের কাগজ ও সচিত্র পরিচয়পত্র লাগবে। আর যাঁদের নাম ওই প্রকল্পে নেই তাঁদের নাম, ঠিকানা, জমির তথ্য লাগবে। এ ছাড়া সচিত্র পরিচয়পত্র, আইএফএস কোড যুক্ত পাশবই, দু’কপি ছবি লাগবে।

সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ বারে একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারেন। এ বছর ধানের সহায়ক মূল্য ধরা হয়েছে ১৮১৫ টাকা। কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু ২০ টাকা বেশি দেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crop Paddy Buying
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE