Advertisement
E-Paper

খরচটুকুই উঠছে না, বন্ধ বাস পরিষেবা

বাস মালিকদের একাংশ জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিপুল ক্ষতি স্বীকার করে বাস চালানো তাঁদের পক্ষে অসম্ভব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০২:৩৪
বাস চালু হল না আজও। কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড চত্বর। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বাস চালু হল না আজও। কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড চত্বর। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

মঙ্গলবার ‘আনলক’ পর্বের দ্বিতীয় দিনেও নদিয়ার কোথাও গড়াল না বেসরকারি বাসের চাকা। সোমবার হাতে গোনা কয়েকটি রুটে বাস চালিয়ে মালিকদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তারপর এ দিন আর কেউ পথে বাস নামানোর উৎসাহ পাননি।

জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার কৃষ্ণনগর-করিমপুর রুটে একটি বাস, চাকদহ নিমতলা-কাঁচরাপাড়া রুটে দু’টি, বেতাই-পলাশি রুটে একটি, রানাঘাট-কালনাঘাট এবং রানাঘাট-বাগআঁচড়া রুটে মোট তিনটি বাস চলাচল করেছিল। তাতে কারও একশ টাকা কারও বা তিরিশ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার আর কোনও বাসই রাস্তায় নামেনি।

বাস মালিকদের একাংশ জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিপুল ক্ষতি স্বীকার করে বাস চালানো তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে মালিক বাস চালাবেন কী করে? যাত্রীই তো নেই।’’ তবে পাশাপাশি তিনি জানান, বাস চালানো নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।

এক বাস মালিক চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, “কেবলমাত্র প্রতি সিটে যাত্রী নিয়ে বাস চললে লোকসান হবেই। যাত্রীসংখ্যা কম হলে বাস চালানো যে কোনও মালিকের পক্ষে কঠিন হবে। তাছাড়া ছোট রুটে বা পকেট রুটে প্রচুর অটো, টোটো চলার কারণে রাস্তায় বাসের যাত্রী পাওয়া যায় না।” পাশাপাশি তাঁর প্রস্তাব, বেসরকারি সমস্ত বাস মালিকদের কাছে থেকে নির্দিষ্ট চুক্তিতে সরকার নিয়ে চালালে ভাল হয়।

দীর্ঘ দু’মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে রাস্তায় বেসরকারি বাস নামার কথা থাকলেও ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকার ও বাস মালিকদের মতপার্থক্যের জেরে সিদ্ধান্ত বদলেছে মালিক পক্ষ। এ দিকে সরকারি অফিস আগামী ৮ জুন খুলবে বলে ঘোষণা করা হলেও, অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং দোকানপাট খুলে যাওয়ায় বহু মানুষ সোমবার থেকেই পথে নেমেছেন। কিন্তু বাসের অভাবে নাকাল হয়েছেন তাঁরা। করিমপুর থেকে কল্যাণী ছবিটা সর্বত্রই এক। করিমপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষ বলেন, “দোকানের সমস্ত মালপত্র কলকাতার বিভিন্ন মার্কেট থেকে কিনতে হয়। তাই যত তাড়াতাড়ি বাস চলবে ততই সুবিধা হবে সকলের।”

তেহট্ট ও পলাশিপাড়া এলাকায় এখনও পর্যন্ত বাস চলাচলের নামগন্ধ নেই। পলাশিপাড়া-কৃষ্ণনগর কিংবা পলাশিপাড়া-পলাশি সব রুটেই বাস পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে, মঙ্গলবার দুপুরে রানাঘাট বাসস্ট্যান্ডের প্রবেশপথ কাঠ দিয়ে আটকে দেন বাস কর্মীরা, যাতে যাত্রীরা বুঝতে পারেন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কর্মীরা জানান, সোমবার সকালে একটি বেসরকারি বাস বলাগড় ঘাট থেকে রানাঘাট বাসস্ট্যান্ডে আসে এবং ফিরে যায়। এ বাবদ সাকুল্যে আয় হয়েছে মাত্র ৪৮ টাকা। যদিও তেল খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ছ’শো টাকা। এই অবস্থায় বাস চালানো বন্ধ রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই বলে জানান তাঁরা। চাকদহ বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে বেশ কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও চলাচল করেনি।

নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য অসীম সাহা বলেন, “আমরা সকলকে বলেছি তাঁরা চাইলেই নিজের দায়িত্বে বাস চালাতেই পারেন। তবে একজন বাস মালিক হিসাবে বলতে পারি এ ভাবে বাস চালানো যায় না।”

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy