Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Garbage

পঞ্চায়েত ভবনের সামনে আবর্জনা তুলে প্রতিবাদ

এর আগেও পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই জেসিপি দিয়ে মাটি কেটে জল বার হওয়ার মতো গর্ত খুঁড়ে নিয়েছিলেন।

পঞ্চায়েত ভবনের সামনে আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভবনের সামনে আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৪:১৩
Share: Save:

দিন কয়েক আগে নর্দমা পরিষ্কার করা হলেও ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছিল রাস্তার উপরেই ডাঁই করে। আবর্জনা পড়ে ছিল স্থানীয় দোকানের সামনেই। বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ হিসাবে সেই ময়লা-আবর্জনা তুলে ফেলে দিয়ে গেল পঞ্চায়েত ভবনের সামনে।

এর আগেও পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই জেসিপি দিয়ে মাটি কেটে জল বার হওয়ার মতো গর্ত খুঁড়ে নিয়েছিলেন। এই দিনের ঘটনায় শুধু এলাকার ব্যবসায়ীরাই নন, নিকাশি ব্যবস্থার এই বেহাল অবস্থার কারণে পঞ্চায়েতের উপরে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও।

অভিযোগ ছিল, দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধ নির্মাণের ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা। সামান্য বৃষ্টিতে তাই জল থইথই অবস্থা হয়ে যায় ভীমপুর বাজার এলাকায়। কিন্তু সেই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে নিকাশি ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার কোনও উদ্যোগই চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। শেষ পর্যন্ত দিন তিনেকে আগে তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে জেসিপি দিয়ে নিকাশি নালা পরিষ্কার করেন। তার পর চাপে পড়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ভীমপুর বাজার এলাকায় বেশ কয়েকটা জায়গায় নর্দমা পরিষ্কার করা হয়। সেই ময়লা-আবর্জনা নর্দমার পাশে, দোকানের সামনেই স্তূপ করে ফেলে রেখেছিল পঞ্চায়েত। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কাজ না হওয়ায় তাঁরা এ দিন সেই সব আবর্জনা নিয়ে গিয়ে পঞ্চায়েতের সামনে জড়ো করে রেখে আসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পরে ভীমপুর থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে ব্যবসায়ী সমিতির লোকজনেরাই সেই ময়লা-আবর্জনা ফের সরিয়ে নিয়ে এলাকা পরিষ্কার করে দেন।

ভীমপুর বাজার কমিটির সম্পাদক সনৎ বিশ্বাস বলছেন, “বারো দিন আগে বাজার এলাকায় নর্দমা পরিষ্কার করেছিল পঞ্চায়েত। কিন্তু সেই আবর্জনা নর্দমার পাশে দোকানের সামনেই ফেলে রাখা হয়েছিল। আমরা বারবার অনুরোধ করলেও লাভ হয়নি। পঞ্চায়েত থেকে সেই ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি।” তিনি আরও জানান, এরই প্রতিবাদে রবিবার এলাকার ব্যবসায়ীরা ডাম্পারে করে সেই ময়লা তুলে পঞ্চায়েত ভবনের সামনে রেখে আসেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘এ ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না।”

এর পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় ভীমপুর থানার পুলিশ। তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সেই ময়লা পঞ্চায়েত ভবনের সামনে থেকে তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। পুলিশের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত সেই ময়লা তুলে নিয়ে অন্যত্র সরানো হয়।

সনৎবাবু এ দিন ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, “এ ভাবে দিনের পর দিন চলতে পারেন না। সামান্য বৃষ্টিতে এই অবস্থা। তা হলে বর্ষাকালে কী হবে, ভেবে দেখুন। পরিস্থিতির যদি কোনও পরিবর্তন না হয়, তা হলে আমরাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব। আগে থেকেই জানিয়ে রাখলাম।”

ভীমপুর বাজার এলাকায় এই বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কারণে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁরাও চাইছেন কোনও স্থায়ী সমাধান। স্থানীয়দের অভিযোগ, কদমতলা এলাকায় নর্দমা বুজিয়ে তৈরি হয়েছে বাড়ি। ফলে নর্দমার জল সরছে না। স্থানীয় এক বাসিন্দা সুফল বিশ্বাস বলছেন, “নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। রাস্তায় জল জমে থাকে দিনের পর দিন। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। এটা পঞ্চায়েতের ব্যর্থতা। আমরা চাই পঞ্চায়েতের তরফে বাজারের নিকাশি ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক। বর্ষার আগে পরিষ্কার করা হোক সমস্ত নর্দমা।”

ভীমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান আয়েত্রী বিশ্বাসের অবশ্য দাবি, “আমরা বর্ষার আগে গোটা বাজার এলাকায় নর্দমা পরিষ্কার করছি, যাতে কোনও ভাবে জল জমে না থাকে। নর্দমার ময়লা তুলে অন্যত্র সরানোও হচ্ছে আ্স্তে আস্তে। কিন্তু এলাকার ব্যবসায়ীদের একটা অংশ আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এসব করছেন।” তিনি আরও বলেন, “বাজার এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। কিন্তু সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীদেরও বলব— তাঁরাও যেন প্লাস্টিক, ময়লা আবর্জনা নর্দমায় না ফেলেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garbage Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE