E-Paper

‘চাচা ফকির’ মেলায় দুই সম্প্রদায়ের মিলন আজও অমলিন

প্রতি বছরের ফাল্গুনের প্রথম সপ্তাহে পাথরঘাটা বিএসএফ ক্যাম্পের পাশে চাচা ফকিরের মেলা বসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৭
চাচা ফকিরের মেলা। পাথরঘাটায়।

চাচা ফকিরের মেলা। পাথরঘাটায়। ছবি: সাগর হালদার।

সম্প্রীতির আবহে শুরু হয়েছে তেহট্টের পাথরঘাটা গ্রামের ‘চাচা ফকির’ মেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সম্প্রীতির মেল বন্ধন বহু বছর আগের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কাঁটাতারের একেবারে পাশে পাথরঘাটা গ্রামের এই এলাকাটি মূলত কৃষি নির্ভর। এলাকার সাধারণ মানুষ ধর্মীয় বিভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সুতোই নিজেদের বেধে সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টি করে চলেছে বছরের পর বছর।

দেড়শো বছরেরও বেশি পুরনো এই মেলাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সম্প্রীতির কেন্দ্র হয়ে ওঠে। প্রতি বছরের ফাল্গুনের প্রথম সপ্তাহে পাথরঘাটা বিএসএফ ক্যাম্পের পাশে চাচা ফকিরের মেলা বসে। চাচা ফকিরের সমাধিকে কেন্দ্র করে ফাল্গুন মাসের এই দিনগুলিতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষের আগমন ঘটেছে। প্রার্থনা প্রণাম সালাম দিয়ে চাচাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

স্থানীয়েরা আরও জানিয়েছেন, চাচা ফকির হিন্দু, নাকি মুসলমান কেউ জানেন না। কিন্তু তিনি উদার মনে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে সাহায্য করতেন। এই কথা গ্রাম থেকে শুরু করে দূর দূরান্তের মানুষের কাছে অজানা নয়। মেলায় হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে প্রত্যেক এই মেলা কমিটির সদস্য। কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকে একই সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই মেলা পরিচালনা করেন।

এই মেলা কমিটির সদস্যদরা জানান, কত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছে তা পূর্ব পুরুষেরা সঠিক ভাবে জানান না। চাচা ফকির বিষয়ে অলৌকিক কিছু গল্প এলাকাতে কথিত আছে এলাকা-জুড়ে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রত্যেক এখানে এসে প্রার্থনা করে নিজের মনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। মেলা কমিটি সূত্রে জানা যায়, নদিয়া জেলা ছাড়াও কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম থেকেও মানুষেরা এই মেলায় আসেন। মেলা চলাকালীন প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে।

স্থানীয় প্রবীণেরা জানিয়েছেন, কাঁটাতার হবার আগে বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর হিন্দু মুসলমান মানুষ একত্রিত হয়ে এই মেলায় আসতেন। তবে কাঁটাতারের পরে সেটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হলেও এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় রবিবার সন্ধ্যায়। চলবে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত। এই মেলা কমিটির সম্পাদক শাহাবুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর এই মেলাকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে সম্পর্কের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। যেটা চাচা ফকিরদের জন্যই সম্ভব হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tehatta Communal harmony

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy