দীর্ঘদিনের একটি পুকুর। তার চরিত্র বদল করে ভরাটের অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামেরই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চরবীরপাড়ার পঞ্চায়েত তৃণমূল সদস্য উত্তম বিশ্বাস ওরফে ঝুনু তাঁর বাড়ির সামনের একটি পুকুর ভরাট করে নির্মাণ করছেন।
অভিযোগ, তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল করেন এবং পঞ্চায়েতের পদেও রয়েছেন। তার ফলেই পুকুর ভরাট করার বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ করার পরেও ফল না পেয়ে কল্যাণীর মহকুমাশাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানালেন গ্রামবাসীরা। কল্যাণীর মহকুমাশাসক অভিজিৎ সামন্তও বলেন, “বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্তের পরেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাসিন্দারা জানান, জন্মের আগের থেকেই তাঁরা ওই জলাভূমিটি দেখছেন। মরসুমে সেখানে পাট চাষও হয়। সম্প্রতি পুকুরে মাটি, আবর্জনা ফেলে ধীরে ধীরে সেটিকে ভরাট চলছে বলে অভিযোগ। যখন সেই কাজ শুরু হয়, তখনই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয়েরা। কিন্তু অভিযোগ, প্রভাবশালীদের চাপে সেই প্রতিবাদ ধোপে টেকেনি। বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করেই সেই কাজ চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বছর ৪২ এর মন্টু বারুই বলেন, “আমাদের জন্ম লগ্ন থেকেই আমরা ওখানে জলাশয়টি দেখেছি। এত বছর পরে ওই জলাশয়টিকে ভরাট করতে আউশ জমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। উত্তম বিশ্বাস রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিএলআরওকে সঙ্গে নিয়ে এই পুকুর ভরাট করছেন।”
তবে উত্তমের সাফাই, “বাড়ির সামনের জলাশয় আমি ভরাট করছি না। আমার গাড়ির ব্যবসা আছে। তাই গাড়ি রাখার জন্য আমি ওই জায়গায় রাবিশ ফেলে সমান করছি। জলাশয়ে কিছু ফেলছি না।”
এ বিষয়ে কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়ের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের পদে থাকা কিছু মানুষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ রকম কার্যকলাপ করছে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যও ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুকুর ভরাট করছেন। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনিক স্তরে ন্যায্য তদন্তের দাবি করছি।”
এ প্রসঙ্গে চাকদহ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক পুষ্পান্ন মণ্ডল বলেন, ‘‘জমিটি আউশ জমি হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। কিন্তু যেহেতু দীর্ঘ বছর ধরে জমিটিকে জলাশয় হিসেবেই ব্যবহার করা হচ্ছিল তাই এই জমি ভরাট করা আইনত অপরাধ। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তের ভিত্তিতেই পরবর্তী
ব্যবস্থা হবে।।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)