আদালত নির্দেশ দিলেও এত দিন রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। আবার বেতন দেওয়ার পোর্টালে এখনও সকলেরই নাম আছে। ফলে চাকরিহারা শিক্ষকদের নাম এপ্রিল মাসের বেতনের পোর্টালে তোলা হবে কিনা তা নিয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অনেকেই বিভ্রান্ত ছিলেন।
নদিয়া জেলার অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকই এখনও পোর্টালে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম তোলেননি। আবার কেউ সব শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর নামই পোর্টালে জমা করেছেন, সব চাকরিহারার নামই নির্বিচারে তার মধ্যে রয়ে গিয়েছে। বুধবার রাজ্য থেকে তালিকা আসার পরে শিক্ষকদের বেতন নিয়ে বিভ্রান্তি কাটলেও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে।
নদিয়ায় তিনশোরও বেশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত যোগ্য শিক্ষকদের বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরেও এ দিনের আগে রাজ্যের তরফে কোনও তালিকা দেওয়া হয়নি। বেতনের পোর্টালে সকলেরই নাম রয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সমস্ত শিক্ষকেরা বেতন পাবেন তাঁদের নামের তালিকাই এ দিন স্কুল পরিদর্শক মারফত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের নাম পোর্টালে জমা করার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে মেল করে নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষকদের যোগদানের দিন, সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্রের নম্বর ইমেল করার পাশাপাশি কাগজে ছাপানো প্রতিলিপিও জমা দিতে বলা হয়েছে।
চাপড়ার রানাবন্ধ সেন্ট মেরিজ় হাই স্কুলের ছ’জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়ন্ত ঘোষ বলেন, “আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ ছিল না। কী করা উচিত বুঝতে না পেরে পোর্টালে কারও নামই জমা দিইনি। এ বার দেব।” একই কথা জানিয়েছেন করিমপুর গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জু সরকারও। ওই স্কুলের আট জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “এ ক্ষেত্রে আমাদের কী করণীয় তা বুঝতে পারছিলাম না। তাই অন্যান্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত পোর্টালে কারও নামই দেব না।”
কেউ কেউ অবশ্য ভিন্ন পথেও হেঁটেছেন। তাঁদের দাবি, বেতন যে দেওয়া হবে না বা পোর্টালে চাকরিহারাদের নাম জমা করা যাবে না, তেমন নির্দেশও আসেনি। তাই তাঁরা এপ্রিল মাসের বেতনের জন্য সকলের নামই জমা করে দিয়েছিলেন। এ বার তাতে সংশোধন করতে হতে পারে, কেননা চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী এবং এ দিনের তালিকা থেকে বাদ পড়া শিক্ষকদের নাম পোর্টালে রয়ে গিয়েছে। অঞ্জনগড় হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুপ্রতীপ রায় বলেন, “সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা না থাকায় আমরা সকলের নামই পোর্টালে জমা করেছিলাম। এ বার নির্দেশ অনুযায়ী তা সংশোধন করে দেওয়া হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)