শাঁখ তৈরি হচ্ছে। ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।
ডোমকলের শাঁখ শিল্পের কদর রয়েছে দেশ জুড়ে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ডোমকলের জিতপুর ও বাজিতপুরের শাঁখের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক সভা করতে জেলায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মঞ্চে জিতপুরের শাঁখ শিল্পী গৌরাঙ্গ পাল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন একটি শঙ্খ। মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই শঙ্খ বাজান মুখ্যমন্ত্রী। ডোমকলের শাঁখ শিল্পীরা তাতে আবেগে আপ্লুত হয়েছিলেন।
খোদ গৌরাঙ্গও মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ধুঁকতে থাকা শাঁখ শিল্পের প্রাণ ফিরবে। এই শিল্পের উন্নয়নে সরকার
এগিয়ে আসবে।
এক সময় নাম থাকলেও ডোমকলের শাঁখ শিল্প এখন অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকছে। আগের মতো শাঁখ শিল্পের বাজার নেই বলে দাবি শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে শিল্পীরা বিপাকে পড়েছেন। আধুনিক শাঁখ তৈরির যন্ত্রের কারণে একাধিক শিল্পীর কাজ একটি যন্ত্র কয়েক ঘণ্টায় করে দিচ্ছে। তা ছাড়া, শাঁখ ব্যবসায়ীদের দাবি, এই যন্ত্রে কাজের ফলে অতিরিক্ত উৎপাদন হচ্ছে শাঁখের। বাজারে বেশি উৎপাদনের ফলে দাম কমছে শাঁখের।
ডোমকলের জিতপুর এলাকার প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পরমানন্দ অধিকারী বলেন, ‘‘একটা সময় শাঁখ শিল্পের হাত ধরেই সমৃদ্ধ হয়েছিল আমাদের গ্রাম। কিন্তু এখন অনেক শিল্পী এবং ব্যবসায়ী ধুঁকছেন এই ব্যবসা করতে গিয়ে। অনেকেই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করতে পারছেন না ব্যবসায় ভাটার জেরে। আসল শাঁখের বদলে বাজারে অনেক নকল শাঁখ চলে এসেছে। তাতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।’’
ডোমকলের জিতপুর এবং বাজিতপুরে প্রায় হাজার দশেক পরিবার শাঁখ শিল্পের উপর নির্ভর করে সংসার চালায়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজার হাজার শিল্পী। কিন্তু আগামী দিনে এই শিল্প নিয়ে আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে।
বাজিতপুরের শাঁখ শিল্পী শিশুতোষ পাল বলেন, ‘‘একটা সময় খুব ভাল ব্যবসা হত। কিন্তু সুনামি এবং লকডাউনের পরে ব্যবসার কোমর ভেঙে গিয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে শিল্পীরাও মার খাচ্ছে। ফলে যত সময় যাচ্ছে তত সঙ্কট বাড়ছে।’’
এ নিয়ে ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘এক সময় সারা দেশে কদর থাকা ডোমকলের শাঁখ শিল্প এখন ধুঁকছে। তবে আশা করছি, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই এই শিল্প তার পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy