নিজস্ব চিত্র
মায়ের হাত ধরে শান্তিপুরের ঘাটে বাঁধা জলযানে উঠেই অবাক বছর ছয়ের রিম্পা দাস। সামনে বসার আসনে একাধিক ‘টেডি’ পুতুল সাজানো। তার পাশেই বসতে হবে তাদের। সে দিকে তাকিয়ে আর টেডির পাশে বসেই কেটে গেল অল্প দূরত্বের জলপথ।
শান্তিপুর আর গুপ্তিপাড়ার মধ্যে ফেরি চলাচলে যাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নেওয়া হয়েছে এ রকমই এক অভিনব উদ্যোগ।
নদিয়া এবং হুগলির মধ্যে জলপথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম শান্তিপুর-গুপ্তিপাড়া ফেরি। শান্তিপুর শহরের প্রান্তে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই ফেরিঘাট অবস্থিত। দু’টি জলযান দিয়ে যাত্রী পারাপার হয় এখানে। এ ছাড়াও যাত্রিবাহী এবং ছোট পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য রয়েছে ভেসেল। আগে প্রতি দিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ পারাপার করতেন। লকডাউন শুরু হলে সরকারি নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় লোক চলাচল।
তবে কিছু অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পারাপার করেছে। সম্প্রতি এখানে ফের ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। দু’টি জলযান সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলাচল করছে। তবে যাত্রীর সংখ্যা কমেছে অনেকটাই। এখন প্রতি দিন গড়ে শ’দুয়েক মানুষ পারাপার করছেন।
ঘাটের ইজারাদার বিকাশ সাহা জানাচ্ছেন, দু’জন যাত্রীর মধ্যে থাকছে একটি পুতুল। তাঁর কথায় "দু’টি জলযানের জন্য এই রকম পঞ্চাশটি পুতুল আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে গোটা কুড়ি। লক ডাউনের কারণে সরবরাহের সমস্যা হচ্ছে।" আপাতত পাওয়া পুতুলগুলি একটি জলযানে বসানো হয়েছে। সব গুলিই স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। বাকিগুলি বসানো হবে অপরটিতে। যাত্রীদের জন্যও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক। এক যাত্রী অনন্যা দাস বলেন, "সুত্রাগড় থেকে গুপ্তিপাড়ায় বাপের বাড়িতে বহু বার এই পথেই যাতায়াত করেছি। এ বার অনেক দিন পর যাচ্ছি। দূরত্ব বজায় রাখার জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা ভাল। "
দুই জেলার যাত্রীরা যেমন এই পথ ব্যবহার করেন তেমনই আনাজ, মাছ, মুড়ি ইত্যাদিও পারাপার হয় এখান দিয়ে। অনেক কাপড় ব্যবসায়ীও চলাচল করেন। বিশেষত শান্তিপুরের কাপড়ের হাটেও যান অনেকে। শান্তিপুরের পুর প্রশাসক অজয় দে বলেন, "আমরা আগেই ইজারাদারকে বলেছিলাম যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা যেন রাখা হয়। এর পাশাপাশি ঘাট, জলযান পরিচ্ছন্ন রাখা ও স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy