Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

বারাণসী থেকে সাইকেলে বাড়ি

এই ১২ জন থাকেন উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। কিন্তু চুল ফেরি করেন বারাণসী ও লাগোয়া এলাকায়। লকডাউনের আগে খাবার সংগ্রহ করে রাখতে পারেননি।

সাইকেল নিয়ে জামশের।

সাইকেল নিয়ে জামশের।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৪০
Share: Save:

লকডাউনের কথা তাঁরা প্রথমে জানতেনই না। অনেক পরে তাঁদের কানে পৌঁছয়। তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তাই খানিকটা আচমকাই তাঁরা দেখেন, গাড়িঘোড়া সব বন্ধ। তাই কয়েক জন মিলে সিদ্ধান্ত নেন, সাইকেলে করেই বাড়ি ফিরবেন। সাইকেল চালাতে তাঁরা এমনিতেও অভ্যস্ত। সাইকেলেই গ্রামে গ্রামে চুল ফেরি করেন। তাই সাইকেলে করেই বারাণসী থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরের মুর্শিদাবাদের গ্রামে ফিরেছেন ১২ শ্রমিক।

এই ১২ জন থাকেন উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। কিন্তু চুল ফেরি করেন বারাণসী ও লাগোয়া এলাকায়। লকডাউনের আগে খাবার সংগ্রহ করে রাখতে পারেননি। হাতে পয়সাও ছিল না। তাঁরা ঠিক করেন, গ্রামেই ফিরে যাবেন। শনিবার বারাণসী থেকে রওনা দেন। জিটি রোড ধরে আসানসোলে পৌঁছন। পরে বর্ধমান শহর হয়ে বেলডাঙা।

তাঁদের এক জন জামসের আলি বুধবার বলেন, “আমরা আ লাদা আলাদা করে এসেছি। যাতে সন্দেহ না হয়। কেউ আটকাতে না পারে। কেউ রাস্তায় গাড়িতে সাইকেল তুলে অর্ধেক পথ এসেছে। তবে আমি সাইকেলে করে পুরো পথ অতিক্রম করেছি।” তিনি বলেন, রাস্তায় ঔরঙ্গাবাদের কাছে একটা মন্দিরের সামনে রাতে খানিকটা বিশ্রাম নিয়েছেন। বাকি রাতগুলো সাইকেলেই কেটেছে। কোন দিন ১৮০ কিলোমিটার, কোনও দিন ১৩০ কিলোমিটার টানা সাইকেল চালিয়েছেন। সঙ্গে সামান্য শুকনো খাবার ছিল, আর জল।

এই ১২ জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের নানা এলাকায়। অনেকেই বাড়ি চলে গিয়েছেন। জামশের বেলডাঙা মির্জাপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে কয়েক দিন থাকবেন। তাঁর কথায়, ‘‘খুব ক্লান্ত। তিন দিন না খেয়ে সাইকেল চালিয়েছি। একটু সুস্থ হলে বাড়ি যাব।’’

বেলডাঙা ১ ব্লকের বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র বলেন, “বেলডাঙার জাতীয় সড়কে এই শ্রমিকদের সাইকেল নিয়ে দেখা গিয়েছে। তাঁদের বাড়ি মুর্শিদাবাদেই বলে খবর। এক জন বেলডাঙায় রয়েছেন। তাঁকে কারও সঙ্গে মিশতে বারণ করা হয়েছে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE