বিসর্জন। নিজস্ব চিত্র।
আদালতের রায়ে মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড, মহাষ্টমীর ধুনুচি নাচ, দশমীর সিঁদুর খেলা— এ বারের মতো ‘না’ হয়ে গেলেও বিধির ব্যারিকেডের ও পাড়ে ভিড় ভাঙল চেনা নিয়মেই। যে ভিড় সামাল দেওয়ার ক্ষমতা না ছিল পুলিশের, না উদ্যোক্তাদের।
সপ্তমীর মেঘলা আকাশ থামিয়ে রেখেছিল জনস্রোত। কিন্তু অষ্টমীর সকালে অঞ্জলির পর বহরমপুর থেকে কান্দি, বেলডাঙা কিংবা ফরাক্কা— রাতভর আগল ভাঙা ভিড় দেখল। অথচ প্রতিটি মণ্ডপের দুয়ারে প্রস্তুত ছিল পুলিশ বুথ, উদ্যোক্তাদের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী। নবমীর নিশি পার করে সিঁদুর খেলাতেও ছিল নিয়ম ভাঙার পণ! সেই ভিড়ের চিহ্নটুকুও বদলায়নি দশমী থেকে একাদশীর ভাসানেও। দূরত্ব বিধি তো ছিলই না, ছিল না মানুষের মুখে ফেসকভারটুকুও। ফলে কপালে ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। আর এ ব্যাপারে তাঁরা দুষছেন, মানুষের সচেতনতার অভাবকেই।
দশমীর বিকেলে বেলডাঙার ডুমনিদহ বিলে পাঁচ ভাসান যাত্রীর মৃত্যূ ছাড়া এ বার জেলা জুড়ে পুজোয় তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা নেই। তবে অনেকেই মনে করছেন, পুলিশ একটু কড়া হলে, আবেগের উচ্ছ্বাসে রাশ টেনে আদালতের নির্দেশকে আরও একটু কার্যকর করার চেষ্টা করলে ওই দুর্ঘটনাও এড়ানো যেত। কিন্তু পুলিশের রাঙা চোখ, উপেক্ষা করে দশমীর বিকেলে ভাসান দিতে রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। বহু মানুষের জমায়েত করে ডিজে, তাসা সহযোগে বিসর্জনের শোভাযাত্রা— বাদ যায়নি কিছুই। এত ভিড় কেন প্রশ্ন শুনে কোনও রাখঢাক না রেখেই এক পুজো উদ্যোক্তাকে বলতে শোনা গেল, “বছরের এই এক-দু’টো দিন কি সব নিষেধ মানা যায়!’’ পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার অবশ্য বলেন, “যাঁরা বিধি ভেঙেছে তাঁদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর তারা যাতে পুজোর অনুমোদন ও সরকারি অনুদান না পায় তার ব্যবস্থাও করা হবে।”
তবে, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার চারশো পুজোর প্রতিমা দর্শন থেকে নিরঞ্জন পর্যন্ত ভিড় ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। আর তাকে যোগ্য সহায়তা দিয়েছে স্থানীয় ক্লাবগুলি, দাবি জঙ্গিপুর পুলিশের। তা হলে, ধুলিয়ান ঘাটের নৌকা বাইচ খেলায় লাগামহীন ভিড় হল কেন? জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ওয়াই রঘুবংশীর সাফাই, “অন্য বছর যেখানে লাখো মানুষের ভিড় হয় এবছর সেখানে হাজার পনেরো মানুষের ভিড় হয়েছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy