ডাক্তারের চেম্বারে ভাঙচুরের অভিযোগ! —নিজস্ব চিত্র।
আচমকা ডাক্তারখানায় হামলা! ভেঙে ফেলা হল এক চিকিৎসকের চেম্বারের আসবাবপত্র। গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সিসিটিভি-সহ বিভিন্ন জিনিস। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দীপায়ন তরফদার অভিযোগ করেছেন, এক রোগীর পরিবারই রয়েছে এই হামলার মূলে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত, চলতি অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এক রোগিণীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দীপায়নের গাফিলতিকেই দায়ী করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৩০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয় তাঁর কাছে। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করায় এই হামলা বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ৩ জুলাই বহরমপুর শহরে লালদিঘির বাসিন্দা ছিলেন দেবলীনা মুখোপাধ্যায়। অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দীপায়নের অধীনে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকের দাবি, ‘‘গত ৩ জুলাই সিজারিয়ান ডেলিভারির পর মা ও শিশু দু’জনে সুস্থ ছিলেন। গত ৬ জুলাই ওই মহিলার প্যানক্রিয়াটিস ধরা পড়ে। বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে এক মাস চিকিৎসা করে বাড়ি ফেরেন।’’
তিনি আরও জানান, বাড়ি ফিরে আসার পর রোগিণীর আরও কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় নতুন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তাঁর। দেখা যায় মহিলার হৃদ্যন্ত্রের ৭০ শতাংশ বিকল হয়ে গিয়েছে। রোগিণীকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও রোগিণীর পরিবার তা করেনি বলে অভিযোগ চিকিৎসকের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য দেবলীনাকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু যাওয়ার পথে বিশাখাপত্তনমের কাছে রোগিণীর শারীরিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। তড়িঘড়ি একটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। দু’দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
চিকিৎসকের দাবি, ‘‘এই মৃত্যুর সঙ্গে সিজার কিংবা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভ্রাট কিংবা ভুল চিকিৎসার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ কিন্তু তাঁর কাছে অর্থ দাবি করে না পাওয়ায় এই ভাঙচুরের ঘটনা বলে দাবি করেন তিনি। থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসক সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর মুর্শিদাবাদ শাখাতেও অভিযোগ করেছেন চিকিৎসক।
যদিও রোগী পরিবারে পক্ষ থেকে চিকিৎসকের চেম্বারে ভাঙচুরের ঘটনায় তাঁদের কেউ যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করছেন দেবলীনার পরিবারের লোকজন। দেবলীনার এক আত্মীয় রমেন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে কোনও সাধারণ অস্ত্রোপচারের আগে হৃদ্যন্ত্রের পরীক্ষা করা হয়। ৩ জুলাই সিজারের আগে সমস্ত রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় রোগীর। তখন তো কোনও রকম সমস্যা ছিল না! পরবর্তী কালে যা হয়েছে সবটাই চিকিৎসকের ভুলে। তবে ভাঙচুরের ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত জানি না।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আমাদের উপরে চাপ তৈরি করার জন্য ওই চিকিৎসক মিথ্যা গল্প ফাঁদছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy