তালাবন্ধ অফিস। নিজস্ব চিত্র।
অসৌজন্য এবং শাসক দলের হয়ে পক্ষপাতের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে। এ বার সিপিএমের দখলে থাকা পঞ্চায়ত সমিতির অফিসে তালা লাগিয়ে সভাপতিকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল হরিণঘাটার বিডিও-র বিরুদ্ধে।
কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডুর কাছে এই অভিযোগ করেছেন হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি শঙ্কর দেবনাথ। যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মহকুমাশাসক বা নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। বিডিও আব্দুল মান্নানের দাবি, একটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছিল। তার বেশি কিছু নয়।
গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ঝড় সত্ত্বেও হরিণঘাটা সিপিএমের হাতেই থেকে গিয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতি তো বটেই, অধিকাংশ পঞ্চায়েতও তারা দখল করেছিল। পরে অবশ্য সিপিএমের অধিকাংশ নির্বাচিত সদস্যকে দলে টেনে প্রায় সব ক’টি পঞ্চায়েতই সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। কিন্তু, বহু চেষ্টা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত সমিতি তারা দখল করতে পারেনি। সেই কারণেই বাঁকা পথে প্রশাসনকে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ সিপিএমের।
শঙ্করবাবুর অভিযোগ, সোমবার তিনি পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে দেখেন, গেট তালাবন্ধ। বিভিন্ন কাজে অফিসে আসা প্রচুর মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, বিডিও অফিস বন্ধ রাখতে বলেছেন। তাঁকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আপনি নির্বাচনী নিয়মের আওতায় পড়ে গিয়েছেন। তাই আর অফিসে বসতে পারবেন না।’ খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তেমন কোনও নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের নেই।’’ সভাপতির অভিযোগ, সে কথা জানানো সত্ত্বেও বিডিও অফিস খুলে দেননি। তিনি একটি চায়ের দোকানে বসে কাজকর্ম সারেন। যাঁরা নানা সার্টিফিকেট নিতে এসেছিলেন, তাঁদের সে সব দেন।
এ দিন মহকুমাশাসকের কাছে গিয়ে পুরো ঘটনা জানান শঙ্করবাবুরা। পরে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বিডিও জানিয়েছেন, চাবি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেই সভাপতির অফিস খোলা যায়নি। তাই সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমি আরও খোঁজ নিচ্ছি।’’ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, চাবি থাকে অফিসের নৈশপ্রহরী সুনীল দাসের কাছে। সোমবার তিনি ছুটিতে ছিলেন। তাঁর অবর্তমানে চাবির দায়িত্ব যাঁর ছিল, সেই দীপঙ্কর দাস জানিয়েছেন, চাবি থাকে নির্দিষ্ট একটি জায়গায়। তা আদৌ হারায়নি।
সিপিএমের অভিযোগ, বিডিও এর আগেও শাসকদলের নুন খেয়ে পক্ষপাত করেছেন। মাস তিন আগে হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতি এবং হরিণঘাটা পুরসভা যৌথ ভাবে সুভাষ মেলার আয়োজন করেছিল। পুরসভা তৃণমুলের দখলে। সেই অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রনপত্রে আয়োজক হিসেবে শুধু পুরপ্রধানের নাম ছিল। ছিল বিডিও-র নামও। তৃণমূল কর্মীদের নাম পর্যন্ত রাখা হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নাম পাখা হয়নি। ফলে, তিনি অনুষ্ঠানেও যাননি। কেন এমন ঘটল, তার কোনও সদুত্তর বিডিও দিতে পারেননি। তবে তৃণমূল সূত্রে সেই সময় দাবি করা হয়েছিল, ছাপার ভুলেই এমনটি ঘটেছে।
শঙ্করবাবুর দাবি, মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করার খানিক পরেই বিডিও ফোন করে দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি অফিসে যেতে পারেন বলেও জানান। যদিও অন্য কিছু কাজ থাকায় শঙ্করবাবু এ দিন অফিসে যাননি।
বিডিও আব্দুল মান্নান অবশ্য বলেন, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এখন তো অফিসে কেউ আসছে না। অনেকেই ভোটের ডিউটিতে। আমি ওঁকে পরে চাবি নিয়ে অফিস করতে বলি। উনি তাতে রাজি হননি।’’ পুরো ব্যাপারটা মিটেও গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy