Advertisement
০২ মে ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু কর্মবিরতি

বুধবার শিক্ষকেরা জানিয়েছিলেন, তিনটি কর্মদিবসের মধ্যে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে ক্লাস বয়কট করা হবে।

অবস্থান বিক্ষোভে শিক্ষকেরা। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

অবস্থান বিক্ষোভে শিক্ষকেরা। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২৫
Share: Save:

বায়োমেট্রিক হাজিরা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশের ঝামেলা চলছিলই। মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটা বড় অংশ। যার জেরে পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে।

বুধবার শিক্ষকেরা জানিয়েছিলেন, তিনটি কর্মদিবসের মধ্যে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে ক্লাস বয়কট করা হবে। আর সেই সময়সীমার মধ্যেই কর্তৃপক্ষ বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করেছেন। ফলে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে।

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শতাধিক শিক্ষক শতরঞ্জি পেতে উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষের ঘরের সামনে বসে পড়েন। উপাচার্য অবশ্য আসেননি। তাঁকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেওয়া হতে থাকে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন আগেই লিখিত ভাবে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল। এ দিন দুপুরে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা এসে তাঁএদের সঙ্গে দেখা করেন। লিখিত বিবৃতিতে এই শিক্ষকদের সমর্থন জানিয়েছে অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচারস অ্যাসোসিয়েশনও (আবুটা)।

দুপুরে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি এবং অন্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তাতে ঝামেলা আরও বাড়ে। শিক্ষকেরা স্লোগান দিয়ে রেজিস্ট্রারের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁদের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার বলেছেন যে শিক্ষকেরা কিছু বোঝেন না। প্রতিনিধি দলের কাছে তা শুনে বাকি শিক্ষকেরা রেজিস্ট্রারের ঘরের সামনে গিয়ে তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করতে থাকেন। খানিক পরে রেজিস্ট্রার বেরিয়ে এসে ক্ষমা চান।

পরে শিক্ষক সমিতির ঘরে সাধারণ সভা করা হয়। আপাতত ঠিক হয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তার পরে শিক্ষকেরা যে সব প্রশাসনিক পদে রয়েছেন, সেখান থেকে অব্যাহতি নেবেন। পুরো ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে জানানো হবে। মামলার প্রস্তুতির কথাও ওঠে।

তবে দু’টি প্রশ্ন অবশ্য এড়ানো যাচ্ছে না। এক, উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্বৈরতান্ত্রিকতার অভিযোগ থাকলে, ঠিক বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করার পরেই শিক্ষকেরা সরব হলেন কেন? অন্য শিবির যে দাবি করছে, সময় মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হবে বলে তাঁরা এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, তা কি পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায়? দুই, ক্লাস বয়কট করে ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা কি সমর্থনযোগ্য?

শিক্ষক সমিতির দাবি, বহু আগে থেকে নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচিত সমিতি না থাকায় একযোগে প্রতিবাদ করা যাচ্ছিল না। সদ্য সমিতি গঠিত হয়েছে। তাই বায়োমেট্রিক হাজিরা-সহ নানা বিষয়ে একযোগে প্রতিবাদ হচ্ছে। সমিতির যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর প্রামাণিক এবং ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থসারথী দে-র বক্তব্য, আগেই লিফলেট বিলি করে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে বাড়তি ক্লাস নিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা হবে। উপাচার্যকে ফোন করা হলেও যথারীতি তিনি তা ধরেননি। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়াও মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Kalyani University Proffessors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE