Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
শ্রম প্রতিমন্ত্রীর পরামর্শ বিড়ি শ্রমিকদের
Biri workers

‘মজুরি না পেলে থানায় যান’

রবিবার অরঙ্গাবাদ নেতাজি মোড়ে এক সভায় মজুরি নিয়ে সোচ্চার নেতারা জানান, নতুন করে মজুরি বাড়িয়ে চুক্তি করতে হবে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে।

শ্রমপ্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

শ্রমপ্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

বিমান হাজরা
অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪২
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিকে ইস্যু করেই বাম ও কংগ্রেস জোট বেঁধে আন্দোলনে নেমে পড়ল মুর্শিদাবাদের বিড়ি শিল্প মহল্লায়। ৬টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ গড়ে বিড়ি শিল্প তালুক অরঙ্গাবাদে রবিবার মহামিছিল ও সভা করে বিড়ি মালিকদের বিরুদ্ধে চুক্তিমত মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ তুলল তারা। এ দিনই রঘুনাথগঞ্জে শ্রমিক মেলার উদ্বোধনে গিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির তোলা দাবিকে কার্যত সমর্থন করে রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন প্রাপ্য মজুরি না পেলে সরাসরি থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দিয়েছেন বিড়ি শ্রমিকদের।

সামনে বিধানসভা নির্বাচন। জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্পাঞ্চলে রয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক। নির্বাচনে তাদের ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর। বর্তমানে তাদের হাজার প্রতি বিড়ি বাঁধাইয়ের জন্য চুক্তি মত মজুরি পাওয়ার কথা ১৫২ টাকা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এই বেতন বৃদ্ধির দ্বিপাক্ষিক চুক্তি কার্যকরী হয়। তিন বছর পেরিয়েও আর মজুরি তো বাড়েইনি তাদের, বরং সেই চুক্তি মত মজুরি না দিয়ে ১২০ টাকা করে বিড়ি বাঁধতে বাধ্য করা হয় শ্রমিকদের, বলে অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস, সিপিএম সহ ৬টি দলের শ্রমিক সংগঠন। সেই সঙ্গে ন্যূনতম সরকারি হারে মজুরির দাবিতে ৭ ফেব্রুয়ারি ডাক দিল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধের।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির নিজেও একজন বিড়ি কোম্পানীর মালিক। এদিন রঘুনাথগঞ্জে শ্রমিক মেলায় বিড়ির মজুরি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় । তিনি বলেন, “চুক্তিমত মজুরি পাওয়ার কথা বিড়ি শ্রমিকদের। তা না দেওয়া হলে শ্রমিকেরা শ্রম দফতরের স্থানীয় সহকারি কমিশনার, ব্লকের বিডিওকে অভিযোগ জানাতে পারেন। তাতে কাজ না হলে থানায় পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করুন শ্রমিকেরা।” মন্ত্রীর কথায় অবশ্য আশ্বস্ত হতে পারছেন না বামুহা গ্রামের মেহেরুন্নেসা বিবি। বলছেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে যে কদিন কাজ পাচ্ছি সেটাও পাব না। প্রতি বছর ভোট এলে মজুরি নিয়ে দাবি ওঠে।রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল বিড়ি শ্রমিকদের সরকারি ন্যুনতম মজুরি চালু হবে। সেটাইবা হল কই ?”

রবিবার অরঙ্গাবাদ নেতাজি মোড়ে এক সভায় মজুরি নিয়ে সোচ্চার নেতারা জানান, নতুন করে মজুরি বাড়িয়ে চুক্তি করতে হবে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে। সরকারি ন্যূনতম মজুরি চালু করতে হবে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য। এদিনই তারা ঘোষণা করেছেন, মজুরি না বাড়ানো হলে ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ফরাক্কা, ধুলিয়ান, সাজুর মোড়, চাঁদের মোড় ও উমরপুরের পাঁচটি জায়গা অবরোধ করে অচল করে দেওয়া হবে।

সিটুর রাজ্য বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হাসনাত খান বলেন, “২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয় বিড়ি মালিক সংগঠনের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির। প্রতি হাজার বিড়ি বাঁধার জন্য চুক্তি মত ১৫২ টাকা মজুরি ধার্য হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেওয়া হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। না কেন্দ্রীয় সরকার, না রাজ্য সরকার কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না। আসলে বিড়ি মালিকেরা এখন রাজনীতিতে ঢুকে পড়ায় শ্রমিকেরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” আইএনটিইউসির বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন রেজার অভিযোগ, “লকডাউনের পর বিড়ি শ্রমিকদের কাজ ৭ দিনের বদলে ৪ দিন করে কাজ দেওয়া হচ্ছে। ১৫২ টাকা মজুরি পাওয়ার কথা। দেওয়া হচ্ছে কম। বহু শ্রমিককে পরিচয়পত্র, পিএফের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Biri workers Wage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE