Advertisement
০২ মে ২০২৪
OTP Scam

পাক গুপ্তচরদের ‘ওটিপি’ বিক্রি! মূল চক্রীকে হিমাচল থেকে ধরল বাংলার পুলিশ, যুক্ত সাইবার জালিয়াতিতেও

তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, বেশ কয়েক জন সহযোগী গ্রেফতার হওয়ার পরে ভিন্‌রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছিলেন গৌরব। দীর্ঘ দিন ধরেই গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন তিনি।

OTP

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মুর্শিদাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:০৪
Share: Save:

পাকিস্তানি ‘গুপ্তচর’দের সাহায্য করার অভিযোগে মুর্শিদাবাদ থেকে আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন সাত জন। এ বার রাজ্য পুলিশের জালে ওই ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) চক্রের মূল পাণ্ডা গৌরব শর্মা। বুধবার রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং হিমাচল প্রদেশ পুলিশের যৌথ অভিযানে গৌরবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘ওটিপি’ চক্রের পাশাপাশি একাধিক সাইবার জালিয়াতি চক্রের সঙ্গেও গৌরবের যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, বেশ কয়েক জন সহযোগী গ্রেফতার হওয়ার পরে ভিন্‌রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছিলেন গৌরব। দীর্ঘ দিন ধরেই গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন তিনি। অবশেষে গৌরবের মোবাইল ‘লোকেশন ট্র্যাক’ করে হিমাচল প্রদেশের একটি রিসর্টে তাঁর হদিস পান তদন্তকারীরা। গ্রেফতার করার পর বুধবার গৌরবকে হিমাচল প্রদেশ থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে মুর্শিদাবাদের লালবাগ আদালতে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের ১০ দিনের এসটিএফ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক। হেফাজতে পেয়ে গৌরব এবং অন্য অভিযুক্তদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার ভাবনা রয়েছে গোয়েন্দাদের।

পাকিস্তানি ‘গুপ্তচর’দের সাহায্য করার অভিযোগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া, নওদা ও রানিনগর-সহ একাধিক এলাকা থেকে এসটিএফের হাতে গ্রেফতার হন সাত জন। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ধৃতেরা বিভিন্ন সাইবার ক্যাফে বা সিমকার্ডের দোকানের মালিক। তদন্তে উঠে আসে, সিমকার্ড ব্যবহার না করেই ভারতীয় নম্বর দিয়ে ফোনে হোয়াট্‌সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলত পাক গুপ্তচরেরা। এই কাজে তাদের ‘ওটিপি’ সরবরাহ করতেন ধৃতেরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হুগলির জাঙ্গিপাড়া থেকে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর অভিযুক্ত ন’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই মালদহের আরও দুই ব্যক্তি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলে। ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজ শুরু হয় এই চক্রের মূল পাণ্ডা গৌরবের।

তদন্তকারীদের আরও দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছেন, পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় সমাজমাধ্যমে। মোটা টাকার লোভে তাঁরা ওই কাজ করতেন। কী ভাবে চলত এই কারবার? ধৃতেরাই জানিয়েছেন, দোকানে সিম কিনতে আসা গ্রাহকদের নথি ও বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে একাধিক সিম কার্ড সক্রিয় করা হত। বায়োমেট্রিক হাতাতে ব্যবহার করা হত বিশেষ ধরনের মেশিন। বিভিন্ন গ্রাহকদের নামে তোলা সিমের নম্বর দিয়ে হোয়াট্‌সঅ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলতেন পাক গুপ্তচরেরা। হোয়াট্‌সঅ্যাপ খোলার সময় ওই ফোন নম্বরে আসা ‘ওটিপি’ দিয়ে গুপ্তচরদের সাহায্য করতেন দোকান মালিকেরা। ‘ওটিপি’ পিছু তাঁরা পেতেন সাত থেকে ন’হাজার টাকা।

পুলিশ জানিয়েছে, গৌরবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, হুগলি ছাড়া অন্য কোনও জেলায় এই চক্র সক্রিয় রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad OTP Pakistan arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE