Advertisement
E-Paper

লাভের অঙ্ক প্রতি লাখে ষাট হাজার

গত দু’বছরে মুর্শিদাবাদের শুধু ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জেই উদ্ধার হয়েছে ১.৩৪ কোটি টাকার জাল নোট। গ্রেফতারের সংখ্যা ৯০ জনেরও বেশি। এর মধ্যে ফরাক্কার দু’টি ও শমসেরগঞ্জের একটি জাল নোটের মামলার তদন্তের ভার গুরুত্ব বুঝে এনআইএ’র হাতে তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০০:১৯
ফরাক্কা থানায় আটক জাল টাকা। —নিজস্ব চিত্র

ফরাক্কা থানায় আটক জাল টাকা। —নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে জাল নোটের কারবারে শীর্ষে মালদহ। এ দেশের যেখানেই জাল নোট ধরা পড়েছে তার সিংহভাগের জোগানদার মালদহের কালিয়াচক অথবা বৈষ্ণবনগর। যেহেতু মালদহের এই দুই এলাকা মুর্শিদাবাদের দুই থানা ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জ লাগোয়া, তাই জাল নোট পাচারের প্রধান পথ তথা করিডোর হয়ে উঠেছে ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জ।

গত দু’বছরে মুর্শিদাবাদের শুধু ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জেই উদ্ধার হয়েছে ১.৩৪ কোটি টাকার জাল নোট। গ্রেফতারের সংখ্যা ৯০ জনেরও বেশি। এর মধ্যে ফরাক্কার দু’টি ও শমসেরগঞ্জের একটি জাল নোটের মামলার তদন্তের ভার গুরুত্ব বুঝে এনআইএ’র হাতে তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। জঙ্গিপুর কলেজের বাণিজ্য শাখার অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু পাল চৌধুরীর উদ্বেগ, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাজারে ছেড়েছে জাল নোটের বাড়তি জোগান সেই আর্থিক ভারসাম্যটাই বেসামাল করে দেবে। জাল নোটের বাড়তি জোগানে জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি ঘটাবে। সাধারণ মানুষ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “নজরদারি বেড়েছে, তাই মালদহ থেকে ঢোকার মুখে জেলার ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জ পুলিশের চোখ এড়াতে পারছে না পাচারকারীরা। তাই এই দুই থানায় জাল নোট ধরা পড়ছে বেশি।”

বিএসএফের কর্তাদের কথায়, ‘‘সরাসরি বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে। ফলে বাংলাদেশের এই সীমান্ত দিয়ে জাল নোট পাচারের এত রমরমা। জাল নোটের কারবারে এক অভিযুক্ত আব্দুর রহিম। আদালতে বিচার চলছে তার। বাড়ি পার দেওনাপুর, বৈষ্ণবনগর। স্ত্রী বিড়ি বাঁধেন। ১৩ বছরের বড় মেয়েও সেই কাজে। এর বাইরে কোনও কাজ নেই সেখানে। অল্প খেটে মোটা আয়ের পথ হিসেবেই তাই পাচারের ব্যবসাকে বেছে নিচ্ছে সকলেই।

পুলিশ জানায়, এক লক্ষ টাকার জাল নোট নিতে দাম দিতে হবে ৩০ হাজার আসল টাকা। কোরিয়ান নোট হলে রেট ৪০ হাজার। অর্থাত ৬০ হাজার টাকা লাভ এক লক্ষ টাকার জাল নোট চালাতে পারলে। কিন্তু এই জাল নোট কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর দিয়েই সীমান্ত পেরোচ্ছে কেন? পুলিশের জেরায় রহিমের ব্যাখ্যা—ভারতের এই জাল নোট তৈরি হয় বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এলাকায়। তাই এই কাছের সীমান্ত পথকেই বেছে নিয়েছে তারা। কারণ বাংলাদেশেও তো জল নোটের ধরপাকড় আছে। আর বৈষ্ণবনগর ও কালিয়াচক দিয়ে বেরোনোর রাস্তা বলতে দু’টো, ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জের ধুলিয়ান। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান লাগোয়া গঙ্গার অন্য পাড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে বৈষ্ণবনগর থানার একাধিক চর। বৈষ্ণবনগরের এই চর এলাকা দিয়েই ধুলিয়ানে গঙ্গায় ফেরিঘাট পেরিয়ে ঢুকছে জাল নোট। সেখান থেকে তা যাচ্ছে ফরাক্কা হয়ে ট্রেন পথে বিহার, মুম্বই, তামিলনাডু।

Fake Currency Malda মালদহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy