মহিলার বর্তমান স্বামীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ তাঁর প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে। নদিয়ার ধুবুলিয়ার ঘটনা। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় মহিলাকে মারধর করছিলেন তার বর্তমান স্বামী মাধবেন্দু দাস। ফোনে খবর পেয়ে ছুটে আসেন প্রাক্তন স্বামী চঞ্চল রায়। এর পরেই মাধবেন্দুকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে চঞ্চলের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় ৩৫ বছরের মাধবেন্দুকে ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রানাঘাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় মাধবেন্দুর। পলাতক চঞ্চল। খুনের ঘটনায় মৃতের স্ত্রী পম্পা দাসও যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ চঞ্চলের আত্মীয়দের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মাধবেন্দু ওরফে ভোলা নদিয়ার ধুবুলিয়া থানা এলাকার বটতলার বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। পাশাপাশি, ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। অভিযুক্ত চঞ্চল ওই এলাকারই বাসিন্দা। কয়েক বছর আগে চঞ্চলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পম্পা দাস নামে এক মহিলার। তাঁদের একটি কিশোরী কন্যাও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় চঞ্চলের বাড়িতে নিত্য যাতায়াত ছিল মাধবেন্দুর। তখন থেকেই পম্পার সঙ্গে মাধবেন্দুর ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পায়। বছরখানেক আগে পম্পাকে বিয়ে করে মাধবেন্দু নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, তখন থেকেই ভোলাকে প্রাণে মারার হুমকি দিতেন চঞ্চল।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত্রি ১২টা নাগাদ মাধবেন্দু এবং তাঁর স্ত্রী পম্পার মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় ভোলা চড়াও হন পম্পার উপরে। পম্পা এবং চঞ্চলের ১২ বছরের কন্যাকে কুরুচিকর ইঙ্গিত করেন বলেও অভিযোগ। ফোন করে বাবা চঞ্চলকে সেই খবর পৌঁছে দেয় মেয়ে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন চঞ্চল। চঞ্চল ফোন করে বাড়ির সামনের গলিতে ডেকে পাঠান মাধবেন্দুকে। সেখানে তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার ভোরে অবস্থার অবনতি হলে রানাঘাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর থেকে খোঁজ নেই চঞ্চলের।
গোটা ঘটনায় পম্পার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মৃত মাধবেন্দুর পরিবার। মৃতের আত্মীয় প্রদীপকুমার সেন অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভোলাকে খুনের নেপথ্যে তাঁর বর্তমান স্ত্রী পম্পার ভূমিকা রয়েছে। তিনি ডেকে নিয়ে এসে ভোলাকে খুন করিয়েছেন। পম্পা এবং তাঁর প্রাক্তন স্বামীর যেন ফাঁসি হয়।’’ অন্য দিকে পম্পা বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে মারধর করছিল ভোলা। মেয়ে লুকিয়ে ফোন করে তার বাবাকে জানিয়ে দেয়। আমি মাধবেন্দুকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলাম। তার পরে কী হয়েছে বলতে পারব না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা মহিদুল শেখ বলেন, ‘‘মাধবেন্দু মাঝেমধ্যেই মত্ত অবস্থায় এসে স্ত্রী পম্পাকে মারধর করতেন। বুধবার সে রকম ঘটনায় ঘটেছিল। এর পরে শুনছি ভোলা খুন হয়েছেন।’’