পাঁচ বছর প্রেম করেছেন। তার পর বিয়ে করেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার বাসিন্দা রুকবানুর শেখ (নাম পরিবর্তিত) এবং মমতাজ বেগম (নাম পরিবর্তিত)। কিন্তু দাম্পত্য সুখের হয়নি তাঁদের। অতএব বিচ্ছেদ। তৃতীয় বিবাহবার্ষিকীর দিনই দাম্পত্যের ইতি ঘটল। শনিবার আইনি প্রক্রিয়ায় বিচ্ছেদ হতেই বাড়ি ঢোকার আগে দুধ দিয়ে স্নান করলেন রুকবানুর। জানালেন, আত্মার শুদ্ধি করতেই দুধস্নান। এ বার নতুন করে জীবন শুরু করবেন।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার বাসিন্দা রুকবানুর ও মমতাজ বিয়ে করেন গত ২০২২ সালের ২১ জুন। কাকতালীয় ভাবে তিন বছর পরে তাঁদের আইনি বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয়েছে চলতি বছরের ২১ জুন, গত শনিবার। আদালতে ফয়সলার পরেই শনিবার ভরসন্ধ্যায় এক বালতি দুধ নিয়ে আসেন রুকবানুর। পরনের শার্ট খুলে দু’হাতে বালতি তুলে মাথায় ঢালেন রুকবানুর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিবারের অমতে প্রতিবেশী তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন রুকবানুর। দাম্পত্যের শুরুতে প্রেম অটুট থাকলেও কিছু দিনের মধ্যে খটাখটি লাগে দু’জনের। রুকবানুরের পরিবারের দাবি, তারা ছেলের বিয়ে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু বৌমা তাঁর স্বামীকে নিয়ে আলাদা থাকতে চান। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। শেষ আইনি পথে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন ছেলে-বৌমা।
আরও পড়ুন:
জানা যাচ্ছে, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেছিলেন মমতাজ। বধূ নির্যাতনের মামলা করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে দীর্ঘ আইনি লড়াই চলে। যা শেষ হল গত ২১ জুন, রুকবানুর ও মমতাজের বিবাহবার্ষিকীর দিন। বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শেষ হতেই ২৫ লিটার গরুর দুধ কিনে বাড়ি যান রুকবানুর। সেটা দিয়ে স্নান করেন। পরে ওই যুবক বলেন, ‘‘অতীতের ভুল এবং পাপ করেছি। শুদ্ধ হতেই দুধ দিয়ে স্নান করলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দীর্ঘ যন্ত্রণা ভোগ করেছি। ডিভোর্স পেয়ে আজ আমি খুব খুশি।’’ রুকবানুরের দাবি, প্রাক্তন স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছিলেন। সে জন্য পরিবারের কাছে ছোট হয়েছেন। সকলেই মানসিক ভাবে কষ্ট পেয়েছেন। বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর দুধে স্নান করে তার প্রায়শ্চিত্ত করলেন তিনি। রুকবানুরের প্রতিবেশী রুনা বিবি বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে অশান্তি চলছিল। ডিভোর্স হয়েছে, ভালই হয়েছে। মারামারি করে থাকার চেয়ে এই ঢের ভাল। কিন্তু ওতটা দুধ দিয়ে স্নানের কী দরকার ছিল! কী জানি... সকলে হাসাহাসি করছে।’’ সদ্য বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া মমতাজের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য মেলেনি।