একমাত্র সন্তানের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে স্ত্রীকে খুনের দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিল লালবাগ মহাকুমা আদালত। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শুভদীপ বিশ্বাস এই রায় শুনিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম লাল্টু শেখ। মুর্শিদাবাদের লালবাগ থানার উল্লাসপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। আদালত সূত্রে খবর, ঘটনাটি ২০২১ সালের। লালটু শেখের সঙ্গে স্ত্রী সারজিনা শেখের দাম্পত্য কলহ হয়েছিল। সকাল ১০টা নাগাদ ঝগড়ার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী সারজিনাকে এলোপাথাড়ি কোপান লাল্টু। গুরতর জখম অবস্থায় মহিলাকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয় তাঁর। তাই সেখান থেকে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় পরে। যদিও বাঁচানো যায়নি সারজিনাকে।
দিদিকে খুনের অভিযোগে জামাইবাবুর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সারজিনার ভাই আইনুল শেখ। বধূ নির্যাতন এবং খুনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। যদিও পরে জামিন পান লাল্টু। প্রায় ৪ বছর মামলা চলার পরে অবশেষে রায় ঘোষণা করেছে আদালত। খুনের ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল দম্পতির পুত্র সাগর শেখ। মায়ের খুনের ঘটনাটি ঘটে তার চোখের সামনে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল। আদালতেও সাক্ষ্য দেন তিনি।
আরও পড়ুন:
মায়ের খুনে প্রত্যক্ষদর্শী ছেলের বয়ান ছাড়াও আরও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে স্ত্রীকে খুনে দোষী সাব্যস্ত হন লাল্টু। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী রইসউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘বধূ নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। স্ত্রীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’’