শুরু হল মিজ়োরাম-কলকাতা সাইরাং এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা। শনিবার ট্রেন উদ্বোধনের পরে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয় ট্রেনটি। রবিবার দুপুরে কৃষ্ণনগর স্টেশনে থামার পরে রীতিমতো উদ্দীপনার তৈরি হয়। এই ঐতিহাসিক ট্রেন যাত্রার সাক্ষী হতে অনেকেই এ দিন উপস্থিত হয়েছিলেন স্টেশনে। এই ট্রেনের মাধ্যমেই মিজ়োরামের রাজধানীর সঙ্গে প্রথম ট্রেন পরিষেবা যুক্ত হল। যা কলকাতার সঙ্গে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অনেকটাই সহজ করবে বলে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি।
ঘটনাচক্রে এই ট্রেনের চালক ছিলেন কৃষ্ণনগরের কাছে কুলগাছি এলাকার বাসিন্দা তাপস সাধুখাঁ। ঐতিহাসিক ট্রেন যাত্রার সাক্ষী হতে কৃষ্ণনগর স্টেশনে এসেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও। ট্রেনটি কৃষ্ণনগর স্টেশনে থামতেই তাঁরাও রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাঁরা দেখা করেন তাপসের সঙ্গে।
এ দিন স্টেশনে উপস্থিত কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অরিন্দম দেবের দেশের বাড়ি ত্রিপুরায়। গোটা পরিবার নিয়ে তিনি স্টেশনে চলে এসেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, ট্রেনের চালক-সহ এই এক্সপ্রেসের সকল রেলকর্মীর হাতে তিনি কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্প তুলে দেন। অরিন্দম বলেন, “একটা অদ্ভূত আবেগ কাজ করেছে ট্রেনটি ঘিরে। মনে হচ্ছে, যেন আমার দেশের বাড়ির সঙ্গে একটা সরাসরি যোগসূত্র তৈরি হল।” তিনি আরও বলেন, “এ বার আমার দেশের বাড়ি যাওয়া খুবই সহজ হয়ে গেল। দু’দিন ছুটি পেলেই ত্রিপুরা থেকে ঘুরে আসতে পারব।”
তবে এই আনন্দের মধ্যেও যেন কিছুটা কাঁটা থেকে গেল রানাঘাটবাসীদের মনে। রানাঘাটে ওই ট্রেন থামানোর দাবি উঠেছিল আগে থেকেই। একাধিক সংগঠনের তরফে ও রাজনৈতিক ভাবেও রেল কর্তৃপক্ষের কাছে এ প্রসঙ্গে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। তাতে অবশ্য উদ্বোধনী ডাউন ট্রেনটি এ দিন রানাঘাটে থামেনি। এ দিন দুপুর থেকেই রানাঘাট স্টেশনের বাইরে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় রানাঘাট প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন ও রানাঘাট নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি। যদিও উদ্বোধনী ট্রেন দেখার জন্য এ দিন দুপুর থেকে রানাঘাট প্ল্যাটফর্মে সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি এ দিন রানাঘাট অতিক্রম করে।
রেল সূত্রে খবর, কলকাতা–সাইরাং এক্সপ্রেস সপ্তাহে তিন দিন চলবে। ট্রেন নম্বর আপ ১৩১২৫ প্রতি শনিবার, মঙ্গলবার ও বুধবার দুপুর ১২:২৫ মিনিটে কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়বে এবং পর দিন রাত ৭:৪৫ মিনিটে সাইরাঙে পৌঁছবে। ফিরতি পথে ট্রেন নম্বর ১৩১২৬ প্রতি সোমবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকাল ৭:১৫ মিনিটে সাইরাং থেকে ছাড়বে এবং পর দিন দুপুর আড়াইটেয় কলকাতায় পৌঁছবে। মোট ২২ কোচের এই এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হলে কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য মিজ়োরাম পৌঁছনো আরও সহজ হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)