Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
marriage

Marriage: বৃদ্ধাশ্রমে প্রথম দেখা, ৬৫’র প্রেমিকার মন জয় করে সাত পাকে বাঁধলেন ৭০-এর প্রেমিক

“প্রথমবার ওর প্রেমের প্রস্তাব ফেরালেও লুকিয়ে কেঁদেছিলাম। পরে ভেবে দেখলাম, শেষ জীবনে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তির কিছু হতে পারে না।’’

বিয়ের পর সুব্রত ও অপর্ণা।

বিয়ের পর সুব্রত ও অপর্ণা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ১৬:৫৬
Share: Save:

বৃদ্ধাশ্রমে দু’জনের প্রথম দেখা। ৬৫ বছর বয়সী অপর্ণাকে ভাল লেগে যায় ৭০ বছরের সুব্রতের। চুলে পাক ধরেছে। দৃষ্টিশক্তি কিছুটা ক্ষীণ হয়েছে। কিন্তু প্রেমে পড়তে লাগে না বয়স। দ্বিধা না রেখে প্রেম নিবেদন করেই ফেলেন সুব্রত। কিন্তু পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন অপর্ণা। মন ভেঙেছিল। অভিমানে বৃদ্ধাশ্রমও ছেড়েছিলেন। তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন বছর। তবু শেষে তাঁর প্রেমে ধরা দিলেন প্রেমিকা। আর কালবিলম্ব না করে এই বসন্তেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন নদিয়ার রানাঘাটের সুব্রত সেনগুপ্ত ও অপর্ণা সেনগুপ্ত।

নদিয়ার চাকদহ লালপুরের বাসিন্দা সুব্রত। রাজ্য পরিবহণ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। পরিবারে মা, দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রী-সন্তানরা আছে। তাঁর বিয়ে-থা করা হয়নি। পারিবারিক সমস্যার কারণে ২০১৯ সালের শুরুতে রানাঘাটের পূর্ণনগর জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমে শেষ জীবন কাটাতে বাড়ি ছেড়েছিলেন সুব্রত। তিনি যাওয়ার আগেই বৃদ্ধাশ্রমে থাকতেন অপর্ণা। প্রথম জীবনে এক অধ্যাপকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তিনিও ছিলেন অবিবাহিতা। জীবন সায়াহ্নে ওই অধ্যাপকের পরিবারে আর আশ্রয় পাননি। শেষ জীবনে বাপের বাড়ির দরজাও তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম। আইসতলার সেই অপর্ণা এবং লালপুরের সুব্রত জীবনের নয়া ইনিংস শুরু করলেন শনিবার।

সুব্রত জানান, বৃদ্ধাশ্রমেই দু’জনের প্রথম দেখা। প্রেম নিবেদন করেছিলেন। কিন্তু অপর্ণা তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর গত ২০২০ সালের মার্চে বৃদ্ধাশ্রম ছেড়ে ওই এলাকাতেই ঘর ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন তিনি। দিন ১০-১২ আগে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সে কথা কানে পৌঁছতেই তাঁর দেখভালের জন্য এগিয়ে আসেন অপর্ণাই। ওই ক’দিনে নিজেদের ভাল করে চিনেছেন। তাই নতুন করে পথচলার সিন্ধান্ত নেন। কিন্তু বিয়েতে ‘অভিভাবক’ কে হবেন? দু’জন গিয়ে ধরেন বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার গৌরহরি সরকারকে। তার পরই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে।

৭০ বছরের সুব্রতের কথায়, “প্রথম দিন অপর্ণাকে দেখে চোখ ফেরাতে পারিনি। ওর মতো এক জন সঙ্গীকে নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম। স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে এনেছি। ও আর পরিচারিকা নয়। আমার ঘরের লক্ষ্মী।’’ আর লাজুক হেসে অপর্ণা বলেন, “প্রথম বার ওর প্রেমের প্রস্তাব ফেরালেও লুকিয়ে কেঁদেছিলাম। পরে ভেবে দেখলাম, শেষ জীবনে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি কিছু হতে পারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

marriage Nadia Ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE