Advertisement
E-Paper

চোখের জলে রাত কাটল গঙ্গাধারীর

সাংসদ নিজে তাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তার মাথার সিটি স্ক্যান সহ জরুরি পরীক্ষা নীরিক্ষাও করা হয়।

মফিদুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৫৫
শোকে ভেঙে পড়েছে হাসিমের পরিবার, হাসিম(ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

শোকে ভেঙে পড়েছে হাসিমের পরিবার, হাসিম(ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

সাংসদের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে বাড়ির ছোট ছেলের। শোকে পাথর গঙ্গাধারীর সরকার পরিবার। ছ’বছর বয়সী হাসিম স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিকের ছাত্র। তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

পরিবারের লোকেরা বলছেন, হাসিম ছোট থেকেই চঞ্চল। ফলে সব সময় তাকে চোখে চোখে রাখতেন তার বাবা-মা। বাড়ির আশেপাশে রয়েছে পুকুর। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য বুধবার দুপুরে ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে পিঁপড়েখালি এলাকায় ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন তার মা হুজাইফা বিবি। পরিবারের লোকেরা বলছেন, তার পরেও শেষ রক্ষা হল না। মায়ের চোখের আড়াল হতেই রাস্তা পারাপার হতে গিয়েই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সাংসদ আবু তাহের খানের গাড়ির ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় ওই বালকের।

সাংসদ নিজে তাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তার মাথার সিটি স্ক্যান সহ জরুরি পরীক্ষা নীরিক্ষাও করা হয়। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের চিকিৎসার পরে মৃত্যু হয় ওই বালকের। চিকিৎসকেরা বলছেন, মাথার আঘাত গুরুতর হওয়ায় ও রক্ত জমাট বাঁধার কারণেই ওই বালক চিকিৎসায় সাড়া দেয়নি। বুধবার দুপুর সন্ধ্যায় হাসিমের মৃত্যুর পরেই শোকের ছায়া এলাকা জুড়ে। ছেলের শোকে পাথর তার বাবা হামিদুল। তিনি বলেন, ‘‘কেমন করে এমনটা হল বুঝতে পারছি না।’’

এ দিন সন্ধ্যায় নিজের বাড়ির দাওয়ায় অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে মৃতের মা হুজাইফা বিবি বলেন, ‘‘ছেলেকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে ব্যাঙ্কের কাজ করছিলাম। কখন বেরিয়ে গিয়েছে বুঝতে পারিনি। চোখে চোখে রেখেও ছেলেও বাঁচাতে পারলাম না।’’

বুধবার সন্ধ্যায় গাড়ির চালক আলমগির মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘গাড়ির চালককে গ্রেফতারের পাশাপাশি দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ছ’বছর ধরে আবু তাহের খানের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করেন আলমগির। এলাকায় দক্ষ চালক হিসেবে তাঁর সুনামও রয়েছে। তাঁর পরিচিতরা বলছেন, মদ তো দূর অস্ত্, পান, সিগারেট পর্যন্ত খান না আলমগির। এমন দুর্ঘটনায় হতবাক আলমগিরের পরিবারের লোকেরাও। দুর্ঘটনার পর থেকেই বালকের পরিবারের পাশে ছিলেন আবু তাহের খান। তিনি বলেন, ‘‘শেষ রক্ষা হল না। খুব খারাপ লাগছে। পরিবারের লোকেদের সমবেদনা জানানোর ভাষা হারিয়েছি। পাশে রয়েছি।’’

Road Accident Abu Taher Khan Naoda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy