E-Paper

ফের নির্বাচন, তৈরি তো!

সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে ও বামেদের সমর্থন নিয়ে বাইরন বিশ্বাস ভোটে জেতার পরে জেলার রাজনীতিতে বিরোধী শক্তির প্রতাপ দ্রুত বেড়েছিল।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৩ ০৯:০৫
২০০৮ সালে ডোমকলে পঞ্চায়েত ভোটের দিনের চিত্র। যে স্মৃতি জেলা ভুলতে পারেনি।

২০০৮ সালে ডোমকলে পঞ্চায়েত ভোটের দিনের চিত্র। যে স্মৃতি জেলা ভুলতে পারেনি।

সাগরদিঘির উপনির্বাচনের পরে কয়েক মাসের মধ্যেই ফের ভোটের ময়দানে জেলা। এ বার পঞ্চায়েত ভোট। তবে তাতেই চিন্তা বেশি সাধারণ মানুষের। বিধানসবা বা লোকসভা ভোটে এ জেলায় হিংসার নজির থাকলেও, পঞ্চায়েত ভোট সব থেকে আতঙ্কের। কেননা, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিন জেলার শুধু ডোমকলেই মারা গিয়েছিলেন ১৪ জন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, নিহতদের সংখ্যা আরও বেশি। সেই স্মৃতি মানুষ ভুলতে পারছেন না। তবে মানু‌ষকে আশ্বস্ত করে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য এ দিন বিজ্ঞপ্তি হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আমাদের যা করণীয় তা আমরা করব।’’

এর মধ্যেই সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে ও বামেদের সমর্থন নিয়ে বাইরন বিশ্বাস ভোটে জেতার পরে জেলার রাজনীতিতে বিরোধী শক্তির প্রতাপ দ্রুত বেড়েছিল। সেই বাইরনই সম্প্রতি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় খাস তৃণমূলের একাংশই অস্বস্তিতে।তিন মাস আগে যাঁর বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে, সেই তাঁকেই নেতা মানতে শাসক দলের অনেকে নারাজ। এর মধ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার যাত্রা হয়েছে। তখন দলীয় স্তরে ভোটাভুটি নিয়ে বিস্তর গোলমাল হয়েছে জেলায়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে জেলারনানা কোণে।

সেই সঙ্গে, জেলায় নিয়মিত আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ও কার্তুজ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশের দাবি, নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে বলেই এগুলো মিলছে। তবে সাধারণ মানুষের দাবি, পুলিশের চোখেই পড়ছে এত অস্ত্র, সে ক্ষেত্রে আরও অস্ত্র নিশ্চয় লুকিয়ে রয়েছে।

এই আবহে পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে যাচ্ছে জেলা।

সব বড় দলেরই অবশ্য মত, সাংগঠনিক ভাবে প্রস্তুত তারা। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও অনেকটাই সেরে ফেলেছেন সকলেই।

কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলছেন, “জেলার সর্বস্তরে প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেব আমরা। সারা বছর যে ছাত্র পড়াশোনা করে, সে জানে তাকে এক দিন পরীক্ষায় বসতে হবে। মে মাসে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা ছিল। সেখানে জুলাই মাসে হচ্ছে।যুবরাজের নব জোয়ার শেষ হলেই যে ভোট হবে তা জানাই ছিল। তবে শাসক দল গোপনে দিনক্ষণ আগে জানতে পারবে সেটা বিলক্ষণ আমরা জানি। তাই নিজেরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখে দিয়েছি, যুদ্ধে নামার জন্য।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লাও বলেন, “আমরা প্রস্তুত। প্রার্থীরাও তৈরি। আশা করছি ভোট হবে বলেই দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। গতবারের পঞ্চায়েত ভোট কেউ ভোলেনি, জীবনে ভুলবেও না। কিন্তু মনে রাখবেন ওটা ছিল ২০১৮ সাল, এটা ২০২৩।আমরা ভোটের মোকাবিলায় প্রস্তুত।”

উত্তর মুর্শিদাবাদের বিজেপি সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “আমরা প্রস্তুত, মানুষও প্রস্তুত। কিন্তু মানুষ ভোট দিতে পারবে তো, এটাই আমাদের কাছে বড় প্রশ্ন।”

জঙ্গিপুরের তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “ভোট নিয়ে প্রস্তুতি সারা।প্রার্থী নিয়ে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। বড় দল তৃণমূল। বড় পরিবারে একাধিক মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু দলেরসিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’

তাঁর কথায়, ‘‘বিরোধীদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। রাজ্য নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছেন। মানুষের আস্থার ভোট নিয়েই জিতে আসতে চাই আমরা।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Jangipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy